পটুয়াখালীর লেবুখালীতে চার লেন পায়রা সেতু নির্মাণের ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ২০২০ সালের মাঝামাঝি সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হতে পারে। দেশের চতুর্থ দীর্ঘ এই সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হলে থাকবে না ফেরির বিড়ম্বনা, ঘুচবে চলাচলের দুর্ভোগ। পদ্মা ও পায়রা সেতু চালু হলে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে পায়রা বন্দর ও পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপন হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে, গুরুত্ব বাড়বে দক্ষিণাঞ্চলের। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালী জেলার প্রবেশদ্বার দুমকি উপজেলার লেবুখালীতে পায়রা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই। এক হাজার ৪৭০ মিটার দীর্ঘ ও ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার প্রস্থের সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হবে এক হাজার ২২ কোটি ২৩ লাখ টাকা। বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের লংজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কোম্পানি লিমিটেড। কনসালটেন্সি ফার্ম হিসেবে আছে বাংলাদেশ, কুয়েত, ভারত ও কোরিয়ার চারটি প্রতিষ্ঠান। সড়ক ও জনপথ বিভাগের পায়রা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী আহমদ শরীফ সজীব জানান, কর্ণফুলী সেতুর আদলে মূল সেতুতে স্প্যান থাকছে চারটি। মাঝ নদী বরাবর দুটি ২০০ মিটার ও পাশের দুটি ১১৫ মিটার করে। এ ছাড়া পটুয়াখালী প্রান্তে ১৬টি ও বরিশাল প্রান্তে ১২টি স্প্যান থাকছে। লেন ছাড়াও থাকছে ১ মিটার দৈর্ঘ্যরে ফুটপাথ। এলাকাবাসী জানান, ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় পৌঁছতে আগে পাড়ি দিতে হতো ১৬টি ফেরি। পায়রা সেতুর কাজ সম্পন্ন হলে ফেরিবিহীন যোগাযোগ ব্যবস্থা হবে দক্ষিণাঞ্চল। ব্যবসায়ী গোলাম সরোয়ার বাদল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পটুয়াখালীতে পায়রা বন্দর, তাপবিদ্যুৎসহ কয়েকটি বিশাল প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
পদ্মা ও লেবুখালী নদীর পায়রা সেতুর কাজ শেষ হলে দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের আমূল পরিবর্তন ঘটবে। কারণ পায়রা বন্দর, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও কুয়াকাটা পর্যটন এলাকা ঘিরে এখানে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগে এগিয়ে আসবেন। পায়রা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক নূর-ই-আলম বলেন, পায়রা বন্দরসহ নানা প্রকল্প মাথায় রেখে ফেরিবিহীন পণ্য আমদানি-রপ্তানি করতে পদ্মা ও লেবুখালীর দুটি সেতুর কাজ এগিয়ে চলছে। লক্ষ্য হলো- নির্ধারিত সময় আগামী বছরের জুনে নির্মাণ কাজ শেষ করা।
