শনিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

পশুর চ্যানেলে নৌযানডুবি নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য

বাগেরহাট প্রতিনিধি

সুন্দরবন এবং মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে একের পর এক ডুবছে নৌযান। এতে চ্যানেলে সৃষ্টি হচ্ছে নাব্যতা সংকট। দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির মুখে পড়েছে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের। ফিটনেসবিহীন নৌযান চলাচল, অতিরিক্ত পণ্যবোঝাই এবং নৌযান মাস্টার-ড্রাইভারদের অদক্ষতার কারণে দুর্ঘটনায় ক্রমেই বাড়ছে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। মোংলা বন্দরের সুদীর্ঘ পশুর চ্যানেলের দুই পাশে রয়েছে ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ খ্যাত ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট- সুন্দরবন। এই চ্যানেলের হাড়বাড়িয়া এলাকায় গভীরতা বেশি থাকায় বন্দরে আসা অধিকাংশ বিদেশি জাহাজ সেখানে অবস্থান নিয়ে পণ্য বোঝাই-খালাস করে থাকে। ফলে নৌযান ডুবির ঘটনাও সেখানে বেশি ঘটেছে। সর্বশেষ গত ২২ জানুয়ারি পশুর চ্যানেলে ডুবে যায় এমবি জুবায়ের নামের একটি বলগেট। ২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল হাড়বাড়িয়ায় ডুবে গেছে কয়লাবোঝাই এমভি বিলাস। এর আগে ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি ক্লিংকারবাহী এমভি শোভা, ওই বছরের ১২ জানুয়ারি কয়লা নিয়ে এমভি আইচগাতী, ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর এমভি জিয়ারাজ, ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর শেলা নদীতে ফার্নেস অয়েল নিয়ে ওটি সাউদার্ন স্টার-৭ নামের একটি লাইটার জাহাজ ডুবে যায়। এছাড়া ২০১৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ক্লিংকার নিয়ে এমভি হাজেরা-২ ও ৩০ সেপ্টেম্বর এমভি নয়ন শ্রী-৩ ডুবেছে সুন্দরবনে। ওটি সাউদার্ন স্টার-৭ ডুবির পর ফার্নেস অয়েল ছড়িয়ে পড়লে সংকটে পড়ে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য। হইচই পড়ে যায় গোটাবিশ্বে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, এ সব নৌযান দুর্ঘটনায় সাময়িকভাবে কোনো ক্ষতি চোখে না পড়লেও এর রয়েছে দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব। যা ধীরে ধীরে বুঝতে পারবে উপকূলের বাসিন্দারা। ইতোমধ্যে সুন্দরবনের জলজ, প্রাণীজ ও জীববৈচিত্র্যে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। পশুর চ্যানেল ও সুন্দরবনের অভ্যন্তরে নৌযান ডুবির ঘটনার সঙ্গে কিছু অসাধু নৌযান মালিকের ইনস্যুরেন্স’র সুযোগ-সুবিধা জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন বন্দর ব্যবহারকারী এইচএম দুলাল ও আহসান হাবিব হাসান।

তারা বলেন, ফিটনেসবিহীন নৌযান ব্যবহার ও অতিরিক্ত বোঝাই নৌ দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি বাহারুল ইসলাম বাহারের দাবি, চ্যানেলে নাব্যতা কম ও পর্যাপ্ত মার্কিং বয়া না থাকায় দুর্ঘটনা ঘটছে। নৌপথের নাব্যতা বৃদ্ধি ও বয়া-বাতি স্থাপনের দাবি নৌযান মালিক-শ্রমিকদের।

সর্বশেষ খবর