মঙ্গলবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

‘ছেলেকে এক নজর দেখে মরতে চাই’

শেরপুর প্রতিনিধি

‘ছেলেকে এক নজর দেখে মরতে চাই’

হাসপাতালে সংগীত প্রশিক্ষক আতিক

আতিকুর রহমান আতিক। বয়স ৬৮ বছর। এক সময় তার সুরে বিমোহিত হতো শেরপুরের সংগীত ভক্ত মানুষ। ফায়ার সার্ভিসে চাকরির পাশপাশি শেরপুরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তিনি পরিচিত মুখ। শেরপুরে তার রয়েছে কয়েক হাজার সংগীত শিক্ষার্থী। গুণী এই শিল্পী এখন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায়। তার শেষ ইচ্ছা, মরার আগে বড় ছেলে আশিকুর রহমান রয়েলকে একনজর দেখতে চান। রাজনৈতিক মামলায় রয়েল পাঁচ মাস ধরে জেলা কারাবন্দী। আদালত সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি রয়েলের জামিনের শুনানি হবে। স্বজনদের প্রশ্ন- ছেলের সঙ্গে বাবার শেষ দেখা হবে তো? স্বজনরা জানান, বেশির ভাগ সময় অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকেন আতিক। যখনই জ্ঞান ফিরে কারাবন্দী ছেলে রয়েলকে দেখার জন্য ছটফট করেন। আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর কাছে মিনতি জানান, তিনি যেনো বড় ছেলেকে দেখে মরতে পারেন। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, এই গুণী শিল্পীর দুই ছেলে ও এক মেয়ে। স্ত্রী মারা গেছেন পাঁচ বছর আগে। ছোট ছেলে অসুস্থ ও বেকার। একমাত্র মেয়ে থাকেন শ্বশুরালয়ে। একে তো অভাবের সংসার তার ওপর বড় ছেলে হাজতে। অর্থ ও লোকের অভাবে তার চিকিৎসা, দেখাশোনা ঠিকমতো হচ্ছে না। শেরপুর উদীচী সভাপতি ও সঙ্গীত শিল্পী অধ্যাপক তপন সারোয়ার বলেন, এই গুণী শিল্পীর পাশে রাষ্ট্রসহ সবার দাঁড়ানো উচিত। জানা যায়, আতিকুর রহমান আতিক একাধারে কণ্ঠশ্লিল্পী, তবলা বাদক, মাউথার বাঁশি ও গিটারিস্ট। চাকরি থেকে অবসর নিয়ে শেরপুর শিল্পকলা, উদীচী, পাতাবাহার খেলাঘর আসর, সংগীত ও চারুকলায় শিক্ষকতা করেছেন। সর্বশেষ শিক্ষকতাই ছিল তার উপার্জনের মূল উৎস।

সর্বশেষ খবর