বুধবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

প্রতারণার জালে সর্বস্বান্ত প্রতিবন্ধী পরিবার

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের মধুপুরে প্রতারণার জালে সর্বস্বান্ত হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে এক প্রতিবন্ধী পরিবার। ৫১ লাখ টাকা জরিমানা প্রদানের আদালতের আদেশ নিয়ে এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছে পরিবারের সদস্যরা। ঘটনাটি ঘটেছে মধুপুর উপজেলার গুবুদিয়া গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী সাহেব আলীর সঙ্গে।

সাহেব জানান, দেলদুয়ার উপজেলার কৈজুরি গ্রামের বাসিন্দা ও বাসাইল প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ের কর্মচারি বাবুল হোসেনের সঙ্গে ২০১৬ সালে পরিচয় হয় তার। তখন অধিক মুনাফার স্বপ্ন দেখিয়ে তাকে ডেইরি ফার্ম করার পরামর্শ দেন বাবুল ও তার ভায়রা সাইফুল। তাদের পরামর্শে সাহেব আলী ভেঙে ফেলেন তার নিজস্ব ৫০ শতাংশ জমির উপর পানির লাইন, বৈদ্যুতিক মোটরসহ স্থাপিত পোল্ট্রি ফার্মের দুটি ঘর। ডেইরি ফার্মে জমি দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত এক ভাগ লাভের প্রতিশ্রুতিতে সাহেব আলীর সঙ্গে করা হয় অংশীদারী ব্যবসার দলিল। দলিলে বাবুলের স্ত্রী, ভাই ও ভায়রাকে করা হয় অংশীদার। একাধিক চুক্তিনামায় স্বাক্ষর ও ব্যাংক লোন পেতে চেকে স্বাক্ষর নিয়ে ১০ পাতা কেটে নেয় বাবুল। চার মাস পর সাহেবের স্ত্রী সেলিনার কাছ থেকেও ১০ পাতার স্বাক্ষরিত চেক নেয় তারা। অংশীদারী কারবারনামা দলিল ও অঙ্গীকারনামার শর্ত মতে সাহেবের পোল্ট্রি ফার্মের স্থানে করা হযরত খাজা বাবা (র.) গরু মোটা তাজাকরণ খামার লিমিটেডের নামে কোনো গরু না এনে সময় ক্ষেপণ করতে থাকে। তাদের চাপ দিলে উল্টো চেকের পাতায় মনগড়া টাকার অংক বসিয়ে সাহেব ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে চারটি মামলা করে। এ সব মামলায় চারটি চেকে ৭৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। আদালত ওই মামলায় সাহেব আলী ও তার স্ত্রীকে ৫১ লাখ টাকা প্রদানের আদেশ ও এক বছর কারাদ- দেয়। এ আদেশের পর সাহেব ও স্ত্রী বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন। অভিযুক্ত বাবুল হোসেন এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। সাহেবের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে টাঙ্গাইল সহকারী পুলিশ সুপার (মধুপুর সার্কেল) এ বিষয়ে যে তদন্ত রিপোর্ট দিয়েছে তাতে প্রতারণার চিত্র উঠে এসেছে। একই সঙ্গে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের তদন্ত রিপোর্টেও উঠে এসেছে একই চিত্র। বিষয়টি গত ১৫ জানুয়ারি স্থানীয় এমপি কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাককেও জানিয়েছেন সাহেব আলী।

সর্বশেষ খবর