কোটা আন্দোলন ঘিরে গত কয়েকদিনে শিল্প নগরী নারায়ণগঞ্জে ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকার। এরমধ্যে গার্মেন্ট খাতে ১০ হাজার কোটি, হোসিয়ারি শিল্পে ১২০০, সূতা শিল্পে ১ হাজার ও ডাইং শিল্পে ১ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা এ তথ্য জানান।
নিট শিল্পে জড়িত কয়েকজন বলেন, ইনটারনেট সেবা বন্ধ থাকায় গার্মেন্ট ব্যবসায়িরা বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে গত ছয় দিন কোনো যোগাযোগ করতে পারেনি। এতে ব্যবসার ভবিষৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই কঠিন পয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে গতকাল কথা হয় বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমের সঙ্গে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, গত ছয় দিনে নারায়ণগঞ্জে শুধু গার্মেন্ট শিল্পে ৯৬০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার) ক্ষতি হয়েছে। কোন অর্ডার বাতিল হয়েছে কিনা এখনো জানতে পারিনি। ইন্টারন্টে সেবা বন্ধ। ফোন কলেও কথা বলতে পারিনি বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে। ক্রেতারা আমাদের নিয়ে কি ভাবছে, আমাদের কী অবস্থান জানাতে পারিনি।
ক্ষতির পরিমাণ জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতি মাসে ৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক বিক্রি হয়। দিনপ্রতি হিসাবে আসে ১৬০ মিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে ৬ দিনে ৯৬০ মিলিয়ন অর্থাৎ ১ বিলিয়ন ডলারের মতো (১০ হাজার কোটি টাকা) ক্ষতি হয়েছে শুধু পোশাক শিল্পে।
নারায়ণগঞ্জ ইয়ার্ন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি লিটন সাহা বলেন, আমাদের ২০০৫টি সুতা কারখানা রয়েছে। ছয় দিন এগুলো বন্ধ থাকায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি কিভাবে পুষিয়ে নেব। অনেক ব্যবসায়ী পথে বসে যাচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জ হোসিয়ারি সমিতির সভাপতি নাজমুল আলম সজল জানান, পুরো বাংলাদেশে ২০ হাজার হোসিয়ারি রয়েছে। এরমধ্যে নারায়ণগঞ্জেই ১২-১৫ হাজার। প্রতি মাসে আমাদের বেঁচাকেনা হয় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে এক সপ্তাহ বাজার বন্ধ থাকায় ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১২০০ কোটি টাকার। তিনি বলেন, প্রতি বৃহস্পতিবার আমাদের টাকা লেনদেনের দিন। সহিংসতার কারণে পুরাতন ও নতুন পণ্য রয়ে গেছে। এগুলোর ভবিষৎ কি হবে তা নিয়ে ব্যবসায়ীরা অনিশ্চয়তায় ভুগছে।
নারায়ণগঞ্জ চেম্বার সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল জানান, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের ১০টি জাতীয় ও জেলাভিত্তিক ৩৪টি সংগঠন। এসব সংগঠনের লেনদেন বন্ধ থাকায় প্রায় হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।