৫ আগস্ট বিকাল ৪টা। পরিবারের সবাইকে নিয়ে টেলিভিশনে শেখ হাসিনা সরকার পতনের খবর দেখছিলেন শামচু মোল্লা (৫৯)। চারদিকে আনন্দ মিছিল। মিছিল দেখতে বাসা থেকে বের হন তিনিও। যাওয়ার সময় ছয় বছর বয়সি ছোট মেয়ে শাম্মীকে বলে যান, সবার জন্য মিষ্টি নিয়ে বাসায় আসব। শামচুর আর মিষ্টি নিয়ে আসা হয়নি। ফিরেছেন লাশ হয়ে। কোতোয়ালি থানার সামনের গলিতে গুলিতে নিহত হন তিনি। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে আর্থিক সংকটে পড়েছে শামচুর পরিবার। দুই মেয়ে নিয়ে কীভাবে চলবেন, দুশ্চিন্তায় পড়েছেন শামচুর স্ত্রী মেঘলা বেগম। শামচু মোল্লার বড় মেয়ে জুঁই কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘বাবা যাওয়ার সময় বলে যান বিজয় মিছিল দেখে আসি।
বাসায় আসার সময় তোমাদের জন্য বিজয়ের মিষ্টি নিয়ে আসব। বাবা ঠিকই এলেন, মিষ্টি নিয়ে নয়, লাশ হয়ে। বাবাকে যারা গুলি করে মেরেছে তাদের বিচার চাই। বাবার কী দোষ ছিল, কেন তাকে হত্যা করা হলো।’ মেঘলা বেগম বলেন, ‘আমার সব শেষ হয়ে গেল। আমি কী নিয়ে বাঁচব। দুটি মেয়েকে কে দেখবে। কীভাবে তাদের পড়ালেখা করাব, মুখে দুমুঠো ভাত তুলে দেব।’
জানা যায়, শামচু নিহত হওয়ার পর আশপাশের মানুষ খাবার দিয়ে তার স্ত্রী-সন্তানকে সহযোগিতা করছে। খাবার ছাড়া সংসারের অন্য প্রয়োজন মিটানোর টাকা নেই। দুই মেয়ের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারছেন না স্বামীহারা মেঘলা বেগম।