‘নিরাপত্তার স্বার্থের দোহাই দিয়ে কাজ ছেড়ে ৩৬০ জন ভারতীয় স্বদেশে চলে যাওয়ায় আশুগঞ্জ-আখাউড়া মহাসড়কের ফোর-লেন প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের পর তারা প্রকল্পের নির্মাণ কাজ ফেলে চলে যায়। এরা সবাই ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফাস্ট্রাচার লিমিটেডের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক। এই অবস্থায় খানা-খন্দে ভরপুর চট্টগ্রাম-সিলেট ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে যান চলাচলে ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পের কাজ আবার কবে নাগাদ শুরু হবে বলা যাচ্ছে না। জানা গেছে, গত ২০১৭ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন হওয়ার পর ভারতীয় নমনীয় ঋণ এলওসির অধীনে ২০১৮ সালে তিনটি প্যাকেজে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত দুই-লেন থেকে মহাসড়কটি চারলেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরু করে এফকনস ২০১৯ এবং ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে প্রকল্পটির কাজ অনেকটাই থমকে যায়। পরবর্তীতে বালু সংকটের কারণে নির্মাণকাজ নির্মাণ কাজ আরও ৬মাস বিলম্বিত হয়। ২০২২ সালে প্রকল্পটির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছিল। এর মধ্যে প্যাকেজ-১ এর অধীনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জের গোল চত্বর থেকে বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত একপাশের দুই লেনের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। প্যাকেজ-২ এর অধীনে বিশ্বরোড থেকে ধরখার পর্যন্ত এক পাশের কাজ অনেকাংশেই শেষ হয়েছে। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর বাইপাস, ঘাটুরা বিরাসার, পৈরতলা, রাধিকা ও উজানিসার এলাকায় মহাসড়কের একপাশে খানাখন্দ থাকায় সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। খানাখন্দ সড়কের কারণে প্রতিনিই ঘাটুরা, বিরাসার, পৈরতলা, পুনিয়াউট, রাধিকা এলাকায় যানজট লেগে থাকে। এতে করে যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অন্যদিকে সড়কের তীব্র ধুলার কারণে আশপাশের বাসাবাড়িসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ক্রেতা সংকটে অনেকটাই লাটে উঠেছে। সমস্যার প্রতিকারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য স্থানীয়রা সরকারের প্রতি দাবি জানান। পরিবহন চালক আলমগীর মিয়া বলেন, নির্মাণাধীন সড়কটি দিয়ে যানবাহন চালাতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে পড়ে থাকার পাশাপাশি যানবাহনের যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রকল্পের ব্যবস্থাপক শামীম আহমেদ জানান, আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত চারলেন প্রকল্পটি তিনটি প্যাকেজে বাস্তবায়ন হচ্ছিল। তিনটি প্যাকেজেই ঠিকাদার ভারতের এফকনস প্যাকেজ-১ এর আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত মহাসড়কের ৬২ শতাংশ এবং বিশ্বরোড থেকে ধরখার বাজার পর্যন্ত ৫২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। পুরো কাজ যেহেতু ভারতীয় ঠিকাদারের অধীনে ছিল, তাই রাস্তার বর্তমানে মেরামতের দায়িত্বও তাদের ছিল।
প্রকল্প ব্যবস্থাপক আশা প্রকাশ করেন যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রকল্পের মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হচ্ছে। আমরা চুরি ঠেকানোর জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিয়েও চুরি ঠেকাতে পারছি না।