হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে যত্রতত্র গড়ে ওঠা টমটম, অটোরিকশা স্ট্যান্ড এবং যাত্রী ওঠানো-নামানোর ফলে দিনদিন জনভোগান্তি চরম আকার ধারণ করছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীসহ চাকরিজীবীরা পড়ছেন বেশি বিপাকে। তীব্র গরমে টমটম, অটোরিকশা যাত্রীদের মধ্যে হাঁসফাঁস অবস্থা চলছে। স্থানীয়রা বলছেন, মাত্র কদিন আগে যখন শিক্ষার্থীরা সড়কে ছিল, তখন টমটম, অটোরিকশাসহ কোনো যানবাহনই নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া যতযত্র থামাতে পারেনি। এমনকি যাত্রী ওঠানো-নামানোও ছিল নির্দিষ্ট স্থানে। কিন্তু সম্প্রতি শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকাসহ আশপাশের সড়কগুলোয় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ট্রাফিক সদস্যরা কোনোমতেই এর নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, শায়েস্তাগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা। এ উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, ঢাকা-সিলেট রেললাইন। এ ছাড়া জেলা শহরে আসার একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিও এ উপজেলার মধ্য দিয়ে গেছে। আবার এ উপজেলার ওপর দিয়েই জেলা শহর থেকে প্রতিদিন শত শত যানবাহন যাতায়াত করে রাজধানী ঢাকায়। ফলে এ উপজেলায় দিনরাত সব সময়ই মানুষের সমাগম থাকে বেশি। এর মধ্যে শায়েস্তাগঞ্জ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে টমটমস্ট্যান্ড। যে কারণে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রধান সড়কটিতে তীব্র যানজট। এ সড়কটি দিয়ে নতুন ব্রিজ পয়েন্ট থেকে রেলওয়ে জংশন, পৌরসভা প্রাঙ্গণ, থানার মোড়, শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজসহ অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি অফিসে যাতায়াত করেন চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। যে কারণে যানজট এ সড়কের নিত্যসঙ্গী। স্থানীয়রা মনে করছেন, যত্রতত্র যাত্রী ওঠানো-নামানো, অবৈধ স্ট্যান্ড ও ফুটপাতের ওপর দোকানপাট গড়ে ওঠার কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তাই শায়েস্তাগঞ্জবাসীকে যানজটের কবল থেকে মুক্ত করতে পৌর কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করতে হবে। স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী জিতু মিয়া বলেন, ‘নির্দিষ্ট স্থানে টমটম, অটোরিকশা পার্কিং করে না। তারা যেখানে সেখানে যাত্রী ওঠায় আবার নামিয়ে দেয়। এ ছাড়া দোকানপাটের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহন দাঁড় করিয়ে রাখে। যে কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়।
পৌর কর্তৃপক্ষ বিষয়টিতে নজর দিলে যানজট কিছুটা হলেও কমে আসত।’ কলেজছাত্র মাহিন আহমেদ বলেন, ‘শায়েস্তাগঞ্জ এখন যানজটের নগর। আগে যেখানে ৫ মিনিটে যাওয়া যেত এখন একই স্থানে যেতে লাগে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট। অনেক সময় আরও বেশি লাগে। তাই কলেজে আসা-যাওয়া কিংবা পরীক্ষার সময় আমাদের ঘণ্টাখানেক সময় হাতে নিয়ে বেরোতে হয়।’ পথচারী অপু আহমেদ বলেন, ‘গাড়ি দিয়ে চলাচল করার থেকে অনেক সময় হেঁটে চলাচল করলে গন্তব্যে আগে যাওয়া যায়। যানজট লাঘবের বিষয়টি যেন দেখার কেউ নেই।’ এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগের ইন্সপেক্টর (টিআই) মাহবুব শাহ বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে তাঁরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, যানজট এড়াতে চালকসহ যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে।