বগুড়া সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে নির্মিত পাকাবাড়ি। ইতোমধ্যে দুটি বাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। ভেঙে মালামাল সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ২৪টি পাকাবাড়ির। এখনো হুমকিতে আছে মুজিব বর্ষের ৪৩টি বাড়িসহ এক গ্রামের শতাধিক বসতভিটা। নির্মাণের সময় সঠিক স্থান নির্ধারণ না করায় সরকারের কোটি টাকা জলে যাচ্ছে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
কয়েকদিন আগে উপজেলার সদর ইউনিয়নের আলতাফ আলীর ঘাটে ইট-রডবোঝাই একটি নৌকা খালাস করা হয়। তাদের জিজ্ঞেস করে জানা যায়, মুজিব শতবর্ষের ঘরগুলো যমুনায় বিলীন হচ্ছে। তড়িঘড়ি করে উপকারভোগীরা ঘরের ইট, রড এবং টিনের চালা কোনোমতে খুলে নিয়ে যাচ্ছেন। শুনে সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর তীরে পাকা বাড়িঘর দাঁড়িয়ে আছে। কোনো ঘরের অর্ধেক আছে আবার অর্ধেক পানিতে বিলীন হয়েছে। কেউ হাতুড়ি দিয়ে পাকা বাড়িতে আঘাত করে চলছেন। সংগ্রহ করছেন পাকাবাড়ির ইট রড। কেউবা ঘরের টিন সংগ্রহ করতে ব্যস্ত রয়েছেন।
সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, চতুর্থ পর্যায়ে উপজেলার বিরামের পাঁচগাছি গ্রামে মুজিব শতবর্ষের ৬৯টি পাকাবাড়ি নির্মাণ করা হয়েছিল। খরচ হয়েছিল প্রায় ২ কোটি টাকা। যমুনার ভাঙনে ৪৩টি পাকাবাড়ি এবং শতাধিক হেল্প মি সংস্থার টিনশেড বাড়ি হুমকিতে রয়েছে। ঘরগুলোকে রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে বেশ কিছু জিও ফেলা হয়েছিল। প্রবল স্রোতের কারণে তা কাজে আসেনি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বাদশা বলেন, ঘরগুলো নির্মাণের সময় স্থান নির্বাচন একেবারেই ভুল ছিল। নদীর দেড় কিলোমিটারের মধ্যে বালু মাটিতে ঘর করা উচিত হয়নি। এখন সরকারের কোটি টাকা জলে যাচ্ছে। ঘরগুলো নির্মাণের সময় আমি জনপ্রতিনিধি ছিলাম না। এমনকি ঘরগুলোর কবুলিওতের সময়ও আমার কাছে থেকে কোনো প্রত্যয়ন গ্রহণ করা হয়নি। ভাঙনের শিকার মানুষগুলোর একটা ঠিকানা হোক সেটা আমি চাই।
সারিয়াকান্দির ইউএন ও তৌহিদুর রহমান বলেন, পাঁচগাছি গ্রামের মুজিব শতবর্ষের ঘরগুলো রক্ষা করতে পাউবোর পক্ষ থেকে জিও এবং টিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। নদীর প্রবল স্রোতে তা রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। নদী ভাঙনের শিকার মুজিব শতবর্ষের ক্ষতিগ্রস্ত উপকারভোগীদের তালিকা করা হয়েছে। চর ডিজাইনের ঘর দিয়ে তাদের পুনরায় পুনর্বাসন করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে।