দক্ষিণ চট্টগ্রামের বড় একটি অংশের বাসিন্দাদের যাতায়াতের মাধ্যম কালুরঘাট সেতু। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সংস্কারের উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। কাজ চলাচলে নদী পারাপারে বিকল্প হিসেবে ব্যবস্থা চালু করা হয় ফেরি। বন্ধ সেতু ব্যবহার এবং ফেরি পারাপারের সময় বারবার ঘটছে দুর্ঘটনা।
ফেরিতে অসতর্কতা, রেলিং না থাকা এবং রাতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সেতু ব্যবহার দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ মনে করছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদ সদস্য সচিব মোস্তফা নঈম বলেন, রেলিং না থাকা এবং যাত্রীদের অসতর্কতায় ফেরিতে দুর্ঘটনা ঘটে। সেতুতে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী চালকদের অসচেতনতা। সবাইকে সতর্কতার সঙ্গে যাতায়াত করতে হবে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়া বলেন, সেতুর কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। এরই মধ্যে রাতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিছু গাড়ি চলছে। চালকরা গোপনে সেতুতে ওঠে গাড়ি দ্রুত গতিতে চালায়। ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে। সেতুতে আলো জ্বালানোর কাজ চলছে। বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দলও আলো বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছেন। সেতুর ওপর টেকসই রেলিং করা হয়েছে। আলোকায়ন ও অন্যান্য কাজ শেষ হলে দুর্ঘটনা কমবে। তাছাড়া এক সঙ্গে অনেক গাড়ি চললে তখন গতিও কম থাকবে। জানা যায়, গত শনিবার সন্ধ্যায় ফেরি দিয়ে কর্ণফুলী নদী পার হওয়ার সময় যাত্রীবাহী একটি অটোরিকশা নদীতে পড়ে যায়। স্থানীয়রা চালকসহ একই পরিবারের চার যাত্রীকে উদ্ধার করতে পারলেও পানিতে তলিয়ে গেছে অটোরিকশাটি। গত ৮ সেপ্টেম্বর কালুরঘাট সেতুতে রেলিং ভেঙে চাঁদের গাড়ি নদীতে পড়ে। চালক ও হেলপার পানিতে পড়ে যান। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করলেও গাড়িটি পাওয়া যায়নি। ২৯ এপ্রিল সেতুর ফেরি সংলগ্ন বেইলি ব্রিজে টেম্পুর ধাক্কায় মারা যান ফাতেমা তুজ জোহরা (১৮) নামে এক কলেজছাত্রী। টেম্পুটি বেইলি ব্রিজের রেলিংয়ের সঙ্গে ওই শিক্ষার্থীকে চাপা দেয়। ২২ জুন সন্ধ্যায় কর্ণফুলী নদীতে ফেরির সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টে যায় নৌকা। পানিতে পড়ে যান দুজন।কর্ণফুলী নদীর ওপর ১৯৩১ সালে প্রায় ৭০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে স্টিলের কাঠামোর কালুরঘাট রেলসেতু নির্মিত হয়। ১৯৬২ শুরু হয় সালে যান চলাচল। আগে দুই বার সেতুটি সংস্কার করা হয়েছিল। সবশেষ মেরামতের জন্য গত বছরের ১ আগস্ট থেকে তিন মাসের জন্য যান চলাচল বন্ধ করা হয়। নির্দিষ্ট সময়ে সংস্কার শেষ হয়নি। কাজ শেষে চলতি মাসের শেষদিকে সেতুটি খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে।