নীলফামারীতে দিগন্তজুড়ে মাঠে মাঠে ছড়িয়ে পড়েছে আগাম ধানের সোনালি হাসি। আশ্বিনে মঙ্গাজয়ী আগুর জাতের নতুন ধানের বাম্পার ফলন ও ভালো মূল্য পেয়ে হাজার হাজার কৃষক পরিবারে এসেছে সমৃদ্ধি। ধানের পাশাপাশি গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় হাটবাজারে চলছে কাঁচা খড়ের রমরমা ব্যবসা। কাটা-মাড়াই শেষে তারা খড় কিনে বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। কিশোরগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি গ্রামে আগাম ধান কাটার পর ওই জমিতে আলুসহ শীতকালীন রকমারি রবিশস্য চাষে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। এখন আগাম আলু রোপণ করবেন চাষিরা। চারা রোপণের শুরু থেকে অনুকূল আবহাওয়া, যথাসময়ে ভারী থেকে হালকা বৃষ্টিপাত হওয়ায় বিগত ফলন ছাড়িয়েছে লক্ষ্যমাত্রা। কৃষি প্রণোদনার উচ্চফলনশীল, কম সময়ে উৎপাদিত খরাসহিষ্ণু ব্রি-৭১, ৭৫, ৮৭, ৯৪, ৯৮সহ হাইব্রিড, চায়না জাতের ধানের ভালো ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উত্তর দুরাকুটি পশ্চিমপাড়া গ্রামের চাষি আনারুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর ৪ বিঘা জমিতে চায়না জাতের ধান চাষ করেছি। বিঘায় ফলন হয়েছে ২০-২৫ মণ। প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকার ওপরে। প্রতি বিঘা জমির খড় বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার টাকা।’ এতে ধান ও খড় বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন তিনি। পুটিমারী ভেড়ভেড়ি গ্রামের আবদুল জলিল বলেন, ‘৬ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। একসময় আগাম আলু চাষের জন্য জমি ফেলে রাখা হতো। এখন আগাম জাতের চায়না ও হাইব্রিড ধান আসায় জমি ফেলে রাখা হয় না। ভুট্টা ও ধানের পর আগাম আলু চাষ করলে আলুর ফলন ভালো হয়, দামও পাওয়া যায়।’ কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার লোকমান আলম বলেন, ‘এ উপজেলা ধানসহ আগাম আলু চাষে রোল মডেল। আগাম ধান চাষ করে কৃষক লাভবান হওয়ার পাশাপাশি অগ্রিম ফসল ঘরে ওঠায় খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি পেয়েছে। ধান কাটার পর যথাসময়ে আগাম আলু চাষ করে কৃষক অধিক লাভবান হন।’