সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারও শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় দেড় শতাধিক পোশাক কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম চলেছে। মূলত গত কয়েক দিনের টানা শ্রমিক অসন্তোষের জেরে তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই ছুটির দিনেও কারখানাগুলো চালু রাখা হয়েছে। এসব কারখানায় শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগ দেন পোশাক শ্রমিকরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও কারখানাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদারসহ শিল্পাঞ্চলে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যৌথ বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে। বিজিএমইএর তথ্যমতে, দেশের সবচেয়ে শ্রমিকঘন শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় ১ হাজার ৮৬৩টি কারখানায় কাজ করেন ৯ লাখ ৮০ হাজার শ্রমিক। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ছুটির দিনেও কাজ করতে পেরে আনন্দিত শ্রমিকরা। চালু কারখানার মালিকরা জানায়, গত কয়েক দিন শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে কারখানাগুলোতে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এর জন্য সময়মতো বায়ারকে অর্ডার সরবরাহ করার লক্ষ্যে ঘাটতি পুষিয়ে নিতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পণ্য রপ্তানির চাপ সামাল দিতে এবং বন্ধের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে মালিক-শ্রমিক উভয়ের সম্মতিতেই আমরা ছুটির দিনে কারখানা খোলা রেখেছি। কারখানায় কাজে যোগদানকারী শ্রমিকরা জানায়, শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করতে পারলে যথাসময়ে বেতন পাব এবং পরিবার নিয়ে খেয়ে পরে বাঁচতে পারব। কয়েক দিন ধরে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে কারখানা বন্ধ থাকায় কাজ করতে পারিনি। এতে করে মালিকের পাশাপাশি আমাদেরও ক্ষতি হয়েছে।
আশুলিয়ার রাইজিং গ্রুপের অ্যাক্টিভ কম্পোজিট মিলস লিমিটেড কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম সোহেল বলেন, প্রায় ১২ বছর ধরে প্রতিবছর একটি হট আইটেমের বিপুল পরিমাণ অর্ডার পেতাম আমরা। কিন্তু সম্প্রতি শ্রমিক অসন্তোষের কারণে সেটি আমাদের হাতছাড়া হয়ে বাইরের দেশে চলে গেছে। টানা আন্দোলনের কারণে বায়াররা আমাদের অর্ডার দেওয়া কমিয়ে দিয়েছে। আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলম বলেন, শুক্রবার ছুটির দিনেও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের প্রায় দেড় শ কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে কর্তৃপক্ষ। কারখানা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ, আর্মড পুলিশ, এপিবিএন, বিজিবি ও র্যাব সদস্যদের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি শিল্পাঞ্চলজুড়ে যৌথ বাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে।