জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগের কবলে পড়েছেন নড়াইল পৌরবাসী। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই পানি ওঠে বসতঘর, সরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। অধিকাংশ রাস্তায় হয় হাঁটুপানি। পৌরসভা স্থাপনের ৫২ বছরেও মেলেনি এ সমস্যার সমাধান। এ সংকট মোকাবিলায় বরাবরই পর্যাপ্ত অর্থের অভাবকে দায়ী করেছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এমন অজুহাত মানতে নারাজ পৌরসভার বাসিন্দারা।
সরেজমিন দেখা যায়, গত দুই মাসে মাঝেমধ্যে হওয়া বৃষ্টিতে নিচু এলাকার বাড়ির উঠানে হাঁটুপানি। কোথাও ঘরের মেঝেতে পানি জমায় নেই দুর্ভোগের শেষ নেই। মেঘ দেখলেই এসব এলাকায় বসবাসরতদের কপালে দেখা দেয় চিন্তার ভাঁজ। সরকারি অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায়ই পানি ওঠে। প্রতি বর্ষা মৌসুমে আবাসিক এলাকার পাশাপাশি সড়কগুলো তলিয়ে যায় বৃষ্টির পানিতে। হাঁটাচলায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বসতঘরে পানি ঢুকলে পরিবারের সদস্যরা কাটান নির্ঘুম রাত। স্কুল-কলেজে যেতেও দুর্ভোগে পড়েন শিক্ষার্থীরা। রাস্তার গর্তগুলো পরিণত হয় ‘মরণফাঁদ’। প্রয়ই ঘটে দুর্ঘটনা। শহরের ভওয়াখালী এলাকার কাইয়ুম হোসেন বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই ঘরে পানি ওঠে। আমাদের বসতঘর, রান্নাঘর ডুবে যায়। চলাফেরা করতে পারি না। প্রায় দুই সপ্তাহ পানিবন্দি হয়ে থাকতে হয়। গোহাটখোলার মর্জিনা বেগম বলেন, বিগত দিনে যখন বৃষ্টি হয়েছে তখন আমাদের শোবার ঘরে হাঁটু পর্যন্ত পানি হয়ে গেছে। রান্নাঘর, টিউবওয়েল ও টয়লেট তলিয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় রান্না। বিছানা বালিশ-কাঁথা ভিজে যায়। একই এলাকার গৃহবধূ সুলতানা জানান, আমাদের মহল্লার সব বাসাবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এখানে বসবাসরতরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। চিত্রা নদীবেষ্টিত নড়াইল পৌর এলাকার দুর্গাপুর, ভওয়াখালী, গোহাটখোলা, ভাদুলিডাঙ্গা, আলাদাতপুর, বরাশুলা ও মহিষখোলাসহ অধিকাংশ এলাকার চিত্র একই। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে অধিকাংশ পৌর এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। পানি নিষ্কাশনের অভাবে বর্ষা মওসুমজুড়ে জলাবদ্ধতা থাকে। শুধু আশ্বাস না দিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌর কর্তৃপক্ষ স্থায়ী সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। নড়াইল পৌর প্রশাসকের বর্তমানে দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক জুলিয়া সুকায়না বলেন, আপাতত প্রয়োজনীয় অর্থ নেই পৌরসভা কর্তৃপক্ষের। ফান্ড পাওয়াসাপেক্ষে ড্রেনেজ নির্মাণ করে স্থায়ীভাবে এ সমস্যার সমাধান করা হবে।