কিছুদিন আগেও আখ মাড়াই মৌসুম এলেই কয়েক ঘণ্টা পর পর দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জে মিলের সাইরন শোনা যেত। আখভর্তি ট্রাক, ট্রাক্টর, নছিমন কিংবা গরুর গাড়ি মিলের গেটে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকত। থাকত কৃষকের আখ কাটার ব্যস্ততা। মিলের কর্মকর্তা কর্মচারীদের পদচারণা। দৃশ্যটি আর চোখে পড়ে না। কর্মচাঞ্চল্য না থাকায় এক সময়ের ব্যস্ত মিলরোডের সড়ক এখন সুনসান নীরব সড়কে পরিণত হয়েছে। তবে চিনি ও খাদ্য করপোরেশনের চেয়ারম্যান ড. লিপিকা ভদ্রের মিল পরিদর্শন ও আশ্বাসে মিলটি আবার চালু হবে, কর্ম ফিরে পাবেন শতশত কর্মকর্তা-কর্মচারী, সেই আশার আলো দেখছেন দিনাজপুরবাসী।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে ১৫টি চিনিকলের মধ্যে সবচেয়ে আধুনিক ও সর্বোচ্চ জমির পরিমাণ রয়েছে সেতাবগঞ্জ চিনিকলের। প্রায় ৩ হাজার ৮০০ একর জমি, আধুনিকমানের উন্নত কারখানা থাকার পরও ২০২০ সালে মিলটির আখ মাড়াই বন্ধ ঘোষণা করে তৎকালীন সরকার। লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে ব্যর্থ হওয়ায় তৎকালীন সরকার একসঙ্গে ছয়টি চিনিকল বন্ধ ঘোষণা করে। এর মধ্যে সেতাবগঞ্জ চিনিকলের নাম থাকায় অনেকেই হতবাক হন। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুথানের পর বন্ধ সেতাবগঞ্জ চিনিকল চালুর দাবি সোচ্চার হয়েছেন ছাত্র-জনতাসহ শ্রমিক কর্মচারীরা। বিভিন্ন সময়ে অবস্থান কর্মসূচি, গণস্বাক্ষর, বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন এমনকি ঢাকায় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য করপোরেশনের চেয়ারম্যানের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
এরই মধ্যে আশার আলো দেখিয়েছেন চিনি ও খাদ্য করপোরেশনের চেয়ারম্যান ড. লিপিকা ভদ্রের সেতাবগঞ্জ চিনিকল পরিদর্শনে। ৬ অক্টোবর তিনি সেতাবগঞ্জ চিনিকল পরিদর্শনে এসে চিনিকল অতিথি ভবনে মিলের কর্মকর্তা, কর্মচারী, শ্রমিক ইউনিয়ন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, আখচাষি ও ছাত্র সমাজের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, সেতাবগঞ্জ চিনিকল একটি বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান। মিলটির কারখানা আধুনিক মানের ও নিজস্ব অনেক জমি থাকার পরও কি কারণে বন্ধ করা হয়েছিল তা প্রশ্ন থেকে যায়। তবে তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, আমি চেষ্টা করব বন্ধ ছয়টি মিলের মধ্যে সেতাবগঞ্জ চিনিকলটি এক নম্বরে রেখে দ্রুত সময়ের মধ্যে আখ মাড়াই চালুর ব্যবস্থা করা যায়।