বিভিন্ন এলাকার অটোরাইস মিলের ছাই ও দূষিত পানির গন্ধে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দিনাজপুরের বোচাগঞ্জবাসীকে। পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বোচাগঞ্জে ৩৫টি অটোরাইস মিল। কোনো মিলেই নিজস্ব পানি শোধনাগার (এটিপি) নেই। এর অধিকাংশই সেতাবগঞ্জ পৌর এলাকার মধ্যে। ভুক্তভোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এসব অটোমিলের ছাই এবং পচা দুর্গন্ধযুক্ত পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ ছাড়া অটোমিলের ছাই কারও চোখে পড়লে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। ছাই উড়ে বিভিন্ন বাড়ির ছাদে, টিনের চালায়, গাছের পাতায়, উঠানে পড়ে কালচে দাগ হয়ে যায়। অনেকের বাড়ির ছাদে কাপড় শুকাতে দিলে কালো দাগ পড়ে। অটোমিল সংলগ্ন বাড়িতে মানুষের রান্না করা খাবারের মধ্যেও কখনো ছাই দেখতে পাওয়া যায়। এসব অটোমিলের পানিতে দুর্গন্ধ। পচা পানি ড্রেন দিয়ে পাশর্^বর্তী নদীতে বা খালবিলে ফেলা হয়। এতে নদী বা খালবিলের পানি থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। নাক-মুখ ঢেকে রাস্তায় চলাচল করতে হয় এলাকার মানুষকে। আবার নদী বা খালবিলে দূষিত পচা পানি জমে থাকায় বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ মরে যাচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, সেতাবগঞ্জ পৌর এলাকার কোলঘেঁষে প্রবাহিত সোয়া নদীতে কয়েকটি অটোমিলের পচা দুর্গন্ধময় পানি এসে পড়ে। সেখানে পানি দূষিত হয়ে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এ ছাড়া ইশানিয়া ইউনিয়নের মুরারিপুর রাক্ষুসিনী নদীর কোলঁেঘষে গড়ে ওঠা কয়েকটি অটোরাইস মিলের দূষিত পানি নদীতে মিশে পানি দূষিত হয়ে গন্ধ ছড়াচ্ছে। একইভাবে হাট মাধবপুরে এক অটোমিলের দূষিত পানি পাশর্^বর্তী ব্রিজের খালে ফেলা হয়। সেতাবগঞ্জ পৌর এলাকায় রয়েছে ২০-২৫টি অটো মিল।
মুরারিপুর এসপি অটোরাইস মিলের স্বত্বাধিকারী সুভাষ সাংবাদিকদের বলেন, সবাই যেভাবে চালাচ্ছে আমিও সেভাবে চালাচ্ছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটিপি নির্মাণের জন্য সময় রয়েছে। সময়মতো সব হবে। তবে তার মিলের চিমনি থেকে নির্গত ছাইয়ের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. রুনায়েত আমিন রেজা জানান, বোচাগঞ্জে ৩৫টি অটোরাইস মিল। কোনো মিলেই নিজস্ব পানি শোধনাগার (এটিপি) নেই। দুই বছরের মধ্যে এটিপি নির্মাণ করার লক্ষ্যে তাদের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়সীমা প্রায় শেষ হয়েছে। আগামীতে অটোরাইস মিলে উৎপাদন চালু রাখতে অবশ্যই এটিপি নির্মাণ করে লাইসেন্স নিতে হবে। অটো মালিকদের ছাইক্লোন স্থাপনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে জনসাধারণের চলাচলে ছাইয়ের কোনো প্রভাব পড়বে না এবং বাড়িতে ছাই প্রবেশ করবে না।