২৬ নভেম্বর, ২০১৫ ১২:৫২

পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হলো 'রাস উৎসব'

বাগেরহাট প্রতিনিধি

পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হলো 'রাস উৎসব'

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে আজ বৃহস্পতিবার ভোরে পূর্ণিমার প্রথম জোয়ারে সমুদ্রের পানিতে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের পুণ্যস্নানে অংশ নেয়ার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব। এবার দেশ-বিদেশের প্রায় ৩০ হাজার সনাতন হিন্দু নর-নারী তাদের পাপ মোচনের প্রত্যাশায় পুণ্যস্নানে অংশ নেয়। এর আগে অস্থায়ী রাস মন্দির ভগবান শ্রী কৃষ্ণসহ দেব-দেবীদের উদ্যোশে পূজা-অর্চনায় অংশ নেয় পুণ্যার্থীরা। এই পুজা-অর্চনায় আগে বুধবার রাতে অস্থায়ী মন্দির প্রাঙ্গনে রাস উৎসবের উদ্ধোধন করেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। র‌্যারের ডিজি তার বক্তবে সুন্দরবনসহ উপকূল 'দস্যুমুক্ত' করার ঘোষণাসহ সুন্দরবনে র‌্যাবের আরো দুটি ক্যাম্প করা হবে বলেও জানান। রাস উৎসব শেষে সুন্দরবন বিভাগের বেধে দেয়া ৮টি নৌ রুট দিয়ে লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও ট্রলারযোগে সকাল থেকেই লোকালয়ে ফিরতে শুরু করেছে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীরা। রাস উৎসব উপলক্ষ্যে শনিবার থেকে গোটা সুন্দরবনে ১০ দিনের রেড এলার্ট জারি করা হয়। বাতিল করা হয় সুন্দরবন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের ছুটি।
রাস উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) জিয়া উদ্দিন জানান, বঙ্গোপসাগর উপকূলে সুন্দরবনের দুবলারচরের আলোরকোলে এবারের রাস উৎসবে প্রায় ৩০ হাজার দেশি-বিদেশি পুণ্যার্থী ও ইকো ট্যুরিস্ট অংশ নেয়। সুন্দরবন বিভাগের হিসাবে এ বছর ১৩২তম রাস উৎসব হলেও ঐতিহাসিকদের মতে, ১৪০০ খ্রিস্টাব্দের পূর্ব থেকেই সুন্দরবনে এটি হয়ে আসছে। প্রতি বছর বাংলা কার্তিক মাসের শেষে বা অগ্রহায়ণের প্রথম দিকের রাস পূর্ণিমার তিথিতে এই উৎসব উদযাপিত হয়ে থাকে। কালের বিবর্তনে জেলে ও বনজীবীসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও সুন্দরবনের দরবেশ গাজী-কালুর স্বরণের মানত দিতে এই উৎসবে যোগ দিয়ে থাকেন। হাজার-হাজার মানুসের পদচারণায় এই রাস উৎসব মেলায় পরিণত হয়েছিল। এই উৎসবে এখন সার্বজনীন রূপ পেয়েছে। এবারও এসেছিল অসংখ্য বিদেশি পর্যটকও। রাস উৎসবে আলোরকোলে তিনদিনব্যাপী মেলায় কুটির শিল্পের বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছিল ব্যবসায়ীরা। রাস উৎসব উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে আযোজন করা হয়েছিলো নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। সব মিলিয়ে এবারের উৎসব শান্তিপূর্ণ ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হওয়ায় কমিটির সভাপতি হিসেবে মেজর (অব.) জিয়া উদ্দিন আইন শৃংখলা বাহিনী, বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।

বিডি-প্রতিদিন/২৬ নভেম্বর ২০১৫/শরীফ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর