২৯ নভেম্বর, ২০১৫ ১২:৩৭

'রাজাকার' ছালামের অত্যাচারে অতিষ্ঠ নলছিটিবাসী

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

'রাজাকার' ছালামের অত্যাচারে অতিষ্ঠ নলছিটিবাসী

ঝালকাঠির নলছিটিতে তালিকাভুক্ত রাজাকার ছালাম মৃধার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে গ্রামের মানুষ। একের পর এক সাধারণ মানুষকে হয়রানির পর এবার একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে নিঃস্ব করতে চালাচ্ছে নানা অপতত্পরতা। আর এ ঘটনায় মগর ইউনিয়নে আমিরাবাদ গ্রামের বাসিন্দা ছালাম রাজাকারের বির’দ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি। গত ৭ নভেম্বর নলছিটি থানায় ডায়েরিটি করা হয়।
ডায়েরি সূত্রে জানা গেছে, নলছিটির মগর ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামের বাসিন্দা মো. সাহেদ আলী মৃধার ছেলে আব্দুস ছালাম মৃধা ওরফে ছালাম রাজাকার। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তৌকাঠী গ্রামের রাজাকার কমান্ডার বজলুর রহমান মোল্লা বাহিনীর অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। স্বাধীনতাযুদ্ধে স্বাধীনতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য এলাকায় সে ছালাম রাজাকার নামে কুখ্যাত। তাছাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নলছিটি উপজেলা কমান্ড'র তৈরী করা রাজাকারের তালিকায় তার নাম ১০ নম্বর সারিতে রয়েছে। এদিকে যুদ্ধ শেষ হলেও পাল্টায়নি ছালাম রাজাকারের চরিত্রের বৈশিষ্ট। স্বাধীনতার প্রায় ৪৪ বছর পরেও তিনি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সর্বস্বান্ত করতে চালিয়ে যাচ্ছে ষড়যন্ত্র। ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আমিরাবাদ গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আউয়াল মৃধা। মুক্তিযুদ্ধের পর থেকেই বাড়ির পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা ছালাম রাজাকার বিভিন্নভাবে তার এবং তার পরিবারের অন্যান্য আত্মীয় স্বজনদের ওপর অত্যাচার চালিয়ে আসছে। যে কারণে ছালাম মৃধা ও তার ভাই জালাল মৃধার অত্যাচারে অতিষ্ঠ এবং আতংকিত হয়ে আছেন মুক্তিযোদ্ধা আউয়াল মৃধার মেয়ে জামাতা মো. জলিল তালুকদারসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।
ডায়েরিতে আরো বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধা আউয়াল মৃধার জীবদ্দশায় ছালাম রাজাকার তার ঘরে সিধ কেটে চুরি করার সময় ধরা পড়ে। এর দায়ে ছালাম রাজাকারকে চার বছর ৬ মাস জেল খাটতে হয়েছে। তবে জেল থেকে বের হয়ে পুনরায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সে। মুক্তিযোদ্ধা আউয়াল মৃধার বাড়ীর জমিজমা ও গাছপালা জবরদখলের পায়তারা চালাচ্ছে এখন। গত প্রায় এক মাস পূর্বে মুক্তিযোদ্ধা আউয়ালের পরিবারের সদস্যারা তাদের জমিতে বেড়া দিতে গেলে ছালাম এবং তার বড় ভাই জামাল মৃধা তাতে বাধা দেয়। এমনকি তাদের হত্যাসহ দেশ থেকে উত্খাতের হুমকিও দেয় তারা। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধার জামাতা মো. জলিল তালুকদার স্থানীয়দের উপস্থিতিতে গত ৭ নভেম্বর জমির সীমানা চি‎হ্নিতকরণে পিলার স্থাপন করলে পুনরায় তাদের হুমকি এবং সীমানা পিলার উপড়ে ফেলাসহ নানাভাবে হুমকি দেয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছালাম রাজাকার কালিজিরা নদীতে জাহাজ লুটকারী ও চৌকিদার বাড়ির ডাকাতি মামলায় কারাভোগ করা আসামী একজন দুর্ধ্বর্স ডাকাত, ধর্ষণকারী, নারীলোভী ও সর্বহারা নেতা ছিলেন। তিনি ডাকাতি মামলায় ইতোপূর্বে বেশ কয়েকবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। ছালাম রাজধানী ঢাকার মালিবাগ শান্তিনগর এলাকায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পালিয়ে বসবাস করছেন। মাঝেমধ্যে গ্রামে এসে স্থানীয় সাধারণ মানুষ এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি ছালাম রাজাকারের অত্যাচার থেকে রেহাই পায়নি তার ভাগ্নে মো. দেলোয়ার হোসেন, তাজ মোহাম্মদ এবং ভাই হাফেজ মো. হারুন অর রশিদও।

বিডি-প্রতিদিন/২৯ নভেম্বর ২০১৫/শরীফ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর