৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ২০:১৩

গরু চোরের উপদ্রবে ঝিনাইদহবাসীর ঘুম হারাম

শেখ রুহুল আমিন, ঝিনাইদহ:

গরু চোরের উপদ্রবে ঝিনাইদহবাসীর ঘুম হারাম

ঝিনাইদহের গ্রামগুলি থেকে বেশ কয়েক মাস ধরে একের পর এক হালের গরুসহ গাভি চুরি হয়ে যাচ্ছে। চোরের উৎপাতে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। অঞ্চল ভিত্তিক পুলিশ ক্যাম্প থাকা সত্ত্বেও গরু চুরি বন্ধ হচ্ছে না।

গ্রামবাসীদের অভিযোগ গরু চুরি করে পুলিশ ক্যাম্পের পাশ দিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যাচ্ছে চোরেরা। ফলে গ্রামের হতদরিদ্র মানুষগুলো মূল্যবান গরু হারিয়ে প্রতিনিয়ত বিপাকে পড়ছে। মাঝেমধ্যে চোর হাতে নাতে ধরা পড়লেও আইনের ফাঁক ফোঁকর দিয়ে জামিন হয়ে আবারও গরু চুরিতে লিপ্ত হচ্ছে।
 
জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলায় ৬৭টি ইউনিয়নে ১১৪৫টি গ্রাম আছে। প্রতিদিন কোন না কোন গ্রাম থেকে গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। চুরির ঘটনা আপাতদৃষ্টিতে মামুলি মনে হলেও গ্রামের হতদরিদ্র মানুষগুলো পথে বসছে। সহায় সম্বল বিক্রি করে গ্রামের স্বল্প পুজির মানুষগুলো গরু পালন করে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরানোর স্বপ্ন দেখলেও চোরের উপদ্রবে তাদের চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিকট অতীতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাজরা গ্রামের শুকুর আলী, আশাদুল ইসলাম, দাউদ হোসেন, মক্কেল মন্ডল, শাহিনুর রহমান, ডাবলু, একই উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের কাজী মন্ডল, বিদ্যুৎ মিয়া, মিজার, আইয়ূব ধনী, বংকিরা গ্রামের শফি উদ্দীন বিশ্বাস, মজো মন্ডল, আশোক দাস, জহুরুল ইসলাম, রতন দাস, আফান উদ্দীন, গোলাম রহমান চেনা ডাক্তার, আরমান মিয়া ও মহিদ্দীনের গরু চুরি হয়েছে। বংকিরা গ্রামের শফি বিশ্বাসের এক রাতে ৫টি ও আরমানের ২টি গরু চুরি হয়। সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের জহুরের ছেলে মিজানুর ও গোপালের গরু চুরি হয়েছে। সদর উপজেলা ছোট ঝিনাইদহ গ্রামের ইদু মিয়া, আবুল হোসেন, লক্ষিপুর গ্রামের আবদর আলী, আইয়ুব হোসেন, আব্দুর রশিদ ডাক্তার, মহিদুল ইসলাম, লুৎফর রহমান ও পচা মিয়াসহ গান্না ইউনিয়ন থেকে সম্প্রতি ২২টি গরু চুরি হয়েছে। সদর উপজেলার পোতাহাটী গ্রামের ওয়াছেল ডাক্তার ও হাফিজুর রহমানের গরু চুরি হয়েছে। কোটচাঁদপুর উপজেলার কলাগাছী গ্রামের সবুজ কর্মকার, একই উপজেলার ধোপাবিলা গ্রামের হারুন, নজির মন্ডল ও মতিয়ার রহমানের গরু চুরি হয়েছে। সদর উপজেলার দইঝুড়ি গ্রামের কামারুল, আব্দুল হাকিম ও অলিপ কুমারের ৫টি গরু চুরি হয়েছে।

গরু চুরি ঠেকাতে অনেকেই এখন গোয়ালঘরে রাত কাটাচ্ছে। সদর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আব্দুল লতিফ জানান, একজন মানুষের বেঁচে থাকার স্বপ্ন গরু চোরেরা মাটি করে দিচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, গান্না ও সাধুহাটী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে চোরের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে বলে শুনেছি। তিনি বলেন, সদর উপজেলায় মোট গ্রাম আছে ৩২৪টি। সেক্ষেত্রে পুলিশ ক্যাম্প আছে মাত্র ৯টি। এখানে গরু পালকদের সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি রাতে গ্রাম পাহারার ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি অচিরেই গরু চুরির বিষয়ে পুলিশ ক্যাম্পে দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিবেন।

বিডি-প্রতিদিন/০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/ এস আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর