২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ১৯:৫৩

বাগেরহাটে সকল ইউনিয়নে প্রার্থী দিতে ব্যর্থ বিএনপি

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট:

বাগেরহাটে সকল ইউনিয়নে প্রার্থী দিতে ব্যর্থ বিএনপি

বাগেরহাটে সকল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী দিতে পারেনি বিএনপি। এজন্য বিএনপির ত্যাগী নেতারা দলের সাংগঠনিক দুর্বলতাকে দায়ী করছেন।

বিএনপির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পদে থাকা গুরুত্বপূর্ণ নেতারা তাদের নিজ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারেনি। এমনকি অধিকাংশ ইউনিয়নে নেতারা তাদের পছন্দের দুর্বল প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে। সে কারনে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পেয়েও কোন কোন প্রার্থী মনোনয়ন সংগ্রহ করে জমা দেননি। আবার অনেক প্রার্থী মনোনয়ন সংগ্রহই করেননি।

বাগেরহাটের জেলার চিতলমারী ও মোল্লাহাট উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে বিএনপি থেকে চেয়ারম্যান পদে কোন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারেননি। এমনকি বাগেরহাট সদরের গোটাপাড়ায় জেলা বিএনপি সভাপতির বাড়ি হলেও সেখানে চেয়ারম্যান পদে দলটির কোন প্রার্থী নেই। জেলার ৭৮টি ইউনিয়নের মধ্যে মাত্র ৪২টিতে বিএনপি দলীয় প্রার্থী দিতে পেরেছে। এজন্য দলটির জেলা ও উপজেলা নেতাদের সাংগঠনিক দুর্বলতাকেই দায়ী করছেন মাঠ পর্যায়ের ত্যাগী নেতাকর্মীরা।
 
মংলা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের নিজ ইউনিয়ন সোনাইতলা থেকে কোন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেননি। বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের দলীয় প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দেয়নি। এছাড়া একই উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নে ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে দুর্বল প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীদের। এছাড়া মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নে কেউ মনোনয়ন সংগ্রহ করেনি। রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেননি। পেড়িখালী ইউনিয়নে ঋনের দায়ে দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।

কচুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকের বাড়ি থাকলেও এই ইউনিয়নে বিএনপি চেয়ারম্যান পদে কোন প্রার্থী দিতে পারেনি। এছাড়া উপজেলার বাধাল, মঘিয়া, রাঢ়িপাড়া ইউনিয়নেও শক্তিশালী প্রার্থী দিতে পারেনি বিএনপি। বাগেরহাট সদরের গোটাপাড়ায় জেলা বিএনপি সভাপতির বাড়ি হলেও সেখানে চেয়ারম্যান পদে দলটির কোন প্রার্থী নেই। সদরের যাত্রাপুর, ডেমা, বিষ্ণপুর ও বেমরতা ইউনিয়নে মনোনয়নপত্র জমা দেননি বিএনপি দলীয় প্রার্থীরা। এছাড়া খানপুর ইউনিয়নে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। দলের ত্যাগী নেতারা মনে করেন, দলীয় সাংগঠনিক দুর্বলতার কারনে অনেক ইউনিয়নে যোগ্য প্রার্থী না দেওয়ায় দল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
 
বাগেরহাট জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম খান বলেন, এক-এগারোর পর থেকে বাগেরহাটে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল হতে থাকে। এমনকি দলের দীর্ঘ দিনের ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন এবং ব্যক্তি চর্চায় সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড দলকে বিপর্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ফলে বর্তমানে বাগেরহাট জেলার উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কোন কার্যক্রম নেই।
 
বাগেরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ সালাম দলের সাংগঠনিক দুর্বলতার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের চাপের মুখে দলীয় প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। আবার অনেক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তারা সবাই যোগ্য। দলের মধ্যে যারা সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা বলছেন, ওইসব নেতারা আসলে বাগেরহাট বিএনপির মঙ্গল চান না।

বিডি-প্রতিদিন/২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/ এস আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর