৩ মে, ২০১৬ ১৪:২৬

পাহাড় জুড়ে আনারসের হাসি

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি:

পাহাড় জুড়ে আনারসের হাসি

পাহাড়ে আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে। টসটসে, রসালো ও মিষ্টি আনারসে ইতিমধ্যে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে বাজারজাত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এখন পাহাড়ের সব স্থান পাকা আনারসের মৌ মৌ গন্ধে ভরপুর।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে আনারসের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু ফলন বেশি হলেও লাভের মুখ দেখছেনা চাষীরা। সংরক্ষণের অভাবে পঁচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কোটি টাকার এসব ফল।

স্থানীয় একাধিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে- প্রতি হাজার আনারস পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে মাত্র দেড় থেকে তিন হাজার টাকায়। স্থানীয়ভাবে পাহাড়ি জেলাগুলোতে কোল্ডষ্টোরেজ না থাকার কারণে এবং দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থায় সুষ্ঠু বাজারজাত করণের অভাবে পাহাড়ে এবছরও দ্রুত পঁচনশীল কৃষিজপণ্য আনারস স্থানীয় বাজারে পানির দরে বিক্রি হচ্ছে। চাষীদের পাশাপাশি লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদেরও।

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, এ মৌসুমে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর পাহাড়ি ঢালু জমিতে আনারসের আবাদ হয়েছে। যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৫০ হাজার মেট্টিক টন।

স্থানীয় আনারস চাষী পুষ্পমোহন চাকমা জানান, চলতি বছর আনারসের উচ্চফলন হয়েছে রাঙামাটিতে। তাই মৌসূমের আগেই বাজারে এসেছে আনারস। কিন্তু তারপরও পাহাড়ের প্রান্তিক চাষীদের ভাগ্য পরিবর্তনের হচ্ছেনা। কারণ একদিকে কাপ্তাই হ্রদের পানি হ্রস। দুর্গম অঞ্চলগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থায় সমস্যা। অন্যদিকে সংরক্ষণের জন্য হিমাগার না থাকা। তাই বহুকষ্টে উৎপাদিত ফলিত ফল বিক্রি করতে হচ্ছে পানির দরে। ন্যায্য দর হতে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা। তাই পার্বত্যাঞ্চলে মৌসূমী ফল সংরক্ষণ ও কৃষকদের স্বার্থে হিমাগার স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন খোদ কৃষি কর্মকর্তারা।

রাঙামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক রমনী কান্তি চাকমা জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় পাহাড়ি জেলাগুলোয় ব্যাপক আনারসের চাষাবাদ হচ্ছে। ফলনও হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার অধিক। তবে আনারসের প্রচুর ফলন পেয়েও দিশেহারা স্থানীয় চাষীরা। কারণ স্থানীয়ভাবে সংরক্ষণ, বাজারজাত করণ ও পরিবহনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকায় ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ফলে পার্বত্য এলাকায় উচ্চ ফলনশীল আনারস চাষাবাদের ব্যাপক সম্ভাবনা সত্ত্বেও প্রতি বছর ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে চাষীরা।

বিডি-প্রতিদিন/ ০৩ মে ১৬/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর