৫ মে, ২০১৬ ১৮:৫২

আর পরীক্ষা দেয় হল না উজ্জ্বলের

ময়মনসিংহে যন্ত্রদানব ট্রাক কেড়ে নিল ৮ প্রাণ

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:

আর পরীক্ষা দেয় হল না উজ্জ্বলের

সারাদেশে চলছে এইচএসসি পরীক্ষা। উজ্জ্বলও অংশ নিয়েছিল এ পরীক্ষায়। শনিবারের পরীক্ষার কারনে সে যেতে চায়নি বোন শিরিনার সাথে ময়মনসিংহে। অনেক মিনতি করে নিয়ে আসা হয় উজ্জ্বলকে। কেঁদে কেঁদে এমনটাই বলছিলেন দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসা নিহত উজ্জ্বলের মামা রইছ উদ্দিন। তিনি বলেন, কিন্তু ময়মনসিংহে আর পৌঁছানো হল না উজ্জ্বলের। এর আগেই ঘাতক ট্রাক কেড়ে নিল উজ্জ্বলসহ ৮ জনের তাজা প্রাণ। আমার ভাগ্নের আর পরীক্ষা দেয়া হল না।

ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ এলাকার মোদারপুর নামক স্থানে যন্ত্রদানব ট্রাক কেড়ে নিয়েছে ৮ তাজা প্রাণ। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে নেত্রকোনাগামী একটি ট্রাক ময়মনসিংহের দিকে আসা একটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান সিএনজির যাত্রীরা। এর মধ্যে একই পরিবারের দুই শিশুসহ রয়েছে ৫ জন।

নিহতরা হলেন: অটোরিক্সা চালক সাদেকুল ইসলাম (২৮), সিএনজি মালিক আশরাফুল ইসলাম (৩০), আব্দুল হাকিম (৪০), কাজল মিয়া (৩৫) তার স্ত্রী শিরিনা (২৫), দুই ছেলে তাহসিন (৭) ও তৌহিদ (৪) এবং শিরিনার ভাই উজ্জ্বল (১৮)। 

কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকটি সিএনজিকে চাপা দেয়। ফলে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের সবার বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলায়। এ ঘটনায় ট্রাকটিকে আটক করতে পারলেও চালক পালিয়ে যায়। 

এদিকে, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আব্দুলাহ আল মামুন ও জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মঈনুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নিহতদের জুতোগুলো। ধুমড়ে মুচড়ে পড়ে আছে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা। রক্তের ছোপ ছোপ দাগ সিএনজিতে। কিন্তু অক্ষতই রয়েছে যন্ত্রদানব সেই ট্রাক।  

খবর পেয়ে ছুটে আসা নিহত উজ্জ্বলের মামা রইছ উদ্দিন জানান, নিহত কাজল মিয়ার পরিবার নেত্রকোনা থেকে ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে ময়মনসিংহ আসছিলেন। নেত্রকোনার উখলা ইউনিয়নের ভরাকান্দা এলাকায় তাদের বাড়ি। তবে উজ্জ্বল ঘাগড়া ইউনিয়নের সাংকিডরি এলাকার বাসিন্দা।

স্থানীয় শরীফুল ইসলাম শাহীন জানান, বেলা ১২টার দিকে ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা সড়কের মোদারপুর নামক স্থানে হঠাৎ একটি বিকট শব্দ হয়। এসময় বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখতে পাই ট্রাক-সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে  ট্রাকের নিচে সিএনজি অটোরিক্সা। পরে আমরা স্থানীয় এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করার চেষ্টা চালাই। তখনও এক ব্যক্তিসহ দুই শিশুর প্রাণ ছিল। কিন্তু সেখান থেকে বের করতে প্রায় আধা ঘন্টা সময় লাগে। ততক্ষণে চিরতরে নিশ্চুপ হয়ে যায় সবাই। তিনি জানান, সিএনজি অটোরিক্সাটি নিয়ম মেনে রাস্তার বাম পাশ দিয়েই চলছিল। কিন্তু  ট্রাকটি ভুলপথে এসে সিএনজি অটোরিক্সাকে ধুমড়ে মুচড়ে দেয়।


 

বিডি-প্রতিদিন/ ০৫ মে, ২০১৬/ আফরোজ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর