ঘড়িতে বাজে তখন সকাল সাড়ে ৮টা। বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের সিংড়া উপজেলার শেরকোল এলাকায় চুরির অভিযোগে এক যুবককে ট্রাকের সামনে রশি দিয়ে বেঁধে চালক দ্রুত গতিতে ট্রাক চালাচ্ছে। আর হাত বাঁধা ঝুলন্ত যুবকটি বাঁচার আকুতি জানিয়ে চিৎকার করছে। এই অমানবিক দৃশ্য দেখে স্থানীয় জনতা কৌশলে ট্রাক থামিয়ে যুবককে উদ্ধার করে চালক-হেলপারকে গণপিটুনি দেয়।
এমন একটি ঘটনার ছবি সামাজিক গণমাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনার ঝড় ওঠে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে এমন অমানবিক ঘটনা ঘটে। পুলিশ ওই ট্রাকটির নম্বরের সূত্র ধরে এর মালিক ও চালকের সন্ধান করছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক নাজমুল হুদা নাসিম জানান, ‘আমরা একটি প্রাইভেট কারে রাজশাহী যাচ্ছিলাম। সঙ্গে দু'জন পরীক্ষার্থী ছিল। হঠাৎ চোখে পড়ে দ্রততগতির একটি ট্রাকের সামনে রশি দিয়ে বাঁধা এক যুবক ঝুলছে। যুবকটি প্রাণভয়ে চিৎকার করছে। ঘটনাটি খুবই অমানবিক মনে হয়েছে।'
ট্রাকের সামনে ওই যুবককে রশিতে বেঁধে নিয়ে যাবার দৃশ্য দেখে সিংড়ার দশ মাইল ব্রিজের কাছে এক ট্রলিচালক কৌশলে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে ট্রাকটি থামান। এসময় স্থানীয় জনতা ঘটনাস্থলে এসে চালক ও হেলপারকে আটক করে। পরে চালক ও হেলপার জানায়, মোবাইল ফোন চুরির অপরাধে তারা ওই যুবককে ট্রাকের সামনে বেঁধে শাস্তি দিচ্ছে। এ কথা শুনে স্থানীয়রা ট্রাকচালক ও হেলপারকে গণধোলাই দিয়ে ছেড়ে দেন। পরে তারা ট্রাকে বাঁধা ওই যুবককে মুক্ত করেন। তবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
সিংড়া উপজেলার শেরকোল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফুল কবীর রুবেল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানা যায়নি।
সিংড়া থানার ওসি নাসির উদ্দিন মন্ডল জানান, ফেসবুক থেকে পাওয়া ছবিতে ট্রাক নম্বর (কুষ্টিয়া ট-১১-১৩০৭) পাওয়া গেছে। ওই নম্বরের সূত্র ধরে ট্রাক মালিক ও চালকের পরিচয় খুঁজতে অনুসন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ। নাটোরে এই ট্রাকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরিচয় পেলেই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।