২৫ জুন, ২০১৬ ২০:০৪
প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগে চালু হচ্ছে পাস পারমিট

শেখ আহ্সানুল করিম, বাগেরহাট :

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগে চালু হচ্ছে পাস পারমিট

এক মাসের ব্যবধানে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জে চারবার পরিকল্পিত ভাবে আগুন দিয়ে বনাঞ্চল পুড়িয়ে দেয়ার পর গত ২৯ এপ্রিল থেকে বনে সব রকমের প্রবেশাধিকার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বন বিভাগ। প্রায় দুই মাস পর আগামীকাল রবিবার থেকে পূর্ব সুন্দরবনের সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে বন বিভাগ। তবে পূর্ব সুন্দরবনে ডলফিনের ৩টি বিশেষ চারণক্ষেত্র ও বিভিন্ন প্রজাতির মাছের অবাধে প্রজননের জন্য সংরক্ষিত ১৮টি ছোট-বড় নদী-খালে সব ধরনের মাছ আহরন আগের মতোই নিষিদ্ধ থাকছে। খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জে চলতি বছরের ২৭ মার্চ ধানসাগর ষ্টেশনের নাংলী এলাকায় সর্বপ্রথম আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এতে সুন্দরবনের ১.৬৬ একর বন পুড়ে যায়। এরপর শাসক দলের আশ্রিত আগুনদস্যুরা ১৩ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় একই এলাকায় বনে পরিকল্পিত ভাবে আগুন ধরিয়ে দেয়। 

আগুনে সুন্দরবনের প্রায় সাড়ে আট একর বনাঞ্চল পুড়ে যায়। বন বিভাগের গঠিত তদন্ত কমিটি আগুন লাগানোর ক্ষেত্রে সুন্দরবনের মিঠা পানির বিলগুলো থেকে অবৈধ উপায়ে মাছ আহরন কাজের সাথে জড়িত লোকালয়ের শাসকদলের এক শ্রেণীর আগুনদস্যুদের সম্পৃক্ততা খুঁজে পায়। ওই ঘটনায় কতিপয় আগুনদস্যুদের নামে সুন্দরবন বিভাগ মামলা করলে আবারও ১৮ এপ্রিল একই এলাকার বনে আগুন লাগিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটে। এতে সুন্দরবনের আধা একর বন আগুনে পুড়ে যায়। 

সর্বশেষ ২৭ এপ্রিল আবার চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর ষ্টেশনের তুলাতুলী এলাকার বনে আগুন ধরিয়ে দেয় ওইসব আগুনদস্যুরা। সর্বশেষ আগুনে তিন একর বন পুড়ে যায়। একমাসের মধ্যে সুন্দরবনে চারবার নাশকতার আগুনে পোড়ার ঘটনা দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচিত হয়। 

এরপর গত ২৯ এপ্রিল থেকে বন বিভাগ অনির্দিষ্টকালের জন্যে পূর্ব সুন্দরবনের পর্যটক বাদে সকল সম্পদ আহরনসহ বনজীবীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষনা করে। এতে শাসকদলের আশ্রিত আগুনদস্যুদের কারনে প্রায় দু’মাস ধরে সুন্দরবন কেন্দ্রিক পাঁচ লক্ষাধিক বনজীবীর জীবন-জীবিকা বন্ধ হয়ে যায়। চরম মানবেতর জীবন যাপন করতে হয় তাদের।

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) জহির উদ্দিন আহমেদ জানান, বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনে প্রভাবশালীদের একের পর এক নাশকতামুলক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রেক্ষিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই বনের পূর্ব বিভাগের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের সম্পদ আহরনসহ প্রবেশের সকল ধরণের পাস পারমিট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। বনজীবীদের মানবিক বিষয়টি বিবেচনা করে আগামীকাল রবিবার থেকে সে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হচ্ছে। সুন্দরবন বিভাগের নির্দিষ্ট রাজস্ব প্রদান করে পূর্ব সুন্দরবনে জেলে-মৌয়ালসহ বনজীবীরা এখন বনে প্রবেশ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে। তবে, পূর্ব সুন্দরবনে ডলফিনের ৩টি বিশেষ চারণক্ষেত্র ও বিভিন্ন প্রজাতির মাছের অবাধে প্রজননের জন্য সংরক্ষিত ১৮টি ছোট-বড় নদী-খালে সব ধরনের মাছ আহরন আগের মতোই নিষিদ্ধ থাকছে। 

 

বিডি প্রতিদিন/২৫ জুন ২০১৬/হিমেল-১৬

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর