শিরোনাম
১ জুলাই, ২০১৬ ১৭:১৭
ঈদে টানা ৯ দিনের ছুটি

কক্সবাজারে পাঁচ লাখ পর্যটক বরণের প্রস্তুতি

৮০ শতাংশ আবাসিক হোটেল বুকিং সম্পন্ন

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

কক্সবাজারে পাঁচ লাখ পর্যটক বরণের প্রস্তুতি

শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে টানা ৯ দিনের সরকারী ছুটি। পাঁচ দিন পরেই খুশির ঈদ। সমাগত ঈদের প্রস্তুতি চলছে প্রতিটি মুসলিম ঘরে। আর এই ঈদকে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় করতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে সাজানো হচ্ছে ভিন্নভাবে। ইতিমধ্যে আগাম বুকিং হয়েছে সাড়ে চার শতাধিক হোটেলের ৮০ শতাংশেরও বেশী। দু’একদিনের মধ্যে বাকী হোটেলসমূহও বুকিং হবে বলে আশা করছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা।

 
এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তায় জেলা পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশের  সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে শক্তিশালী আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি মাঠে থাকবে সাদা পোষাকধারী আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সমুদ্র সৈকতসহ অন্যান্য পর্যটন স্পটে চুরি, ছিনতাই ও পর্যটক হয়রানি রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। 

ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হোসাইন মু. রায়হান কাজেমী জানান, শহরের লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলী, কবিতা চত্ত্বর, শাহীন চত্ত্বর, দরিয়া নগর, ইনানীতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় ১২৬ জন সদস্য তিন শিফ্টে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করবে।
 
তিনি বলেন, জেলা পুলিশের সাথে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করা হবে। কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের নিরাপত্ত্বা নিশ্চিত করা হবে। 
ট্যুরিস্ট পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, পর্যটকদের জান-মালের নিরাপত্তায় মাইকে সতর্ক বার্তা প্রচার করা হচ্ছে। হয়রানির শিকার পর্যটকেরা ০১৭৬৯৬৯০৭৩৪ নাম্বারে অভিযোগ দিলে সাথে সাথে আমরা ব্যবস্থা নেব।
 
ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েন অব কক্সবাজার (টুয়াক) এর সভাপতি ও ইউনিভার্সেল ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস এর স্বত্ত্বাধিকারী এম. রেজাউল করিম রেজা জানান, সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকদের সেবায় ‘কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন’ এবং ‘বে-ক্রুজ’ এই দুইটি শীপ চলবে। কক্সবাজারে আসা দেশী বিদেশী পর্যটকদের ভ্রমণ আনন্দময় করতে আমরা নিজস্ব ‘গাইড’ দিয়ে সহায়তা করব। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, পর্যটন এলাকাসমূহের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো সাজানো হচ্ছে নানা আকর্ষণীয় সাজে। হোটেল-মোটেলে পরিবর্তন করা হচ্ছে পুরনো জিনিসপত্র। দেওয়ালের পুরনো আস্তর তুলে লাগানো হচ্ছে প্লাস্টিক পেইন্ট কিংবা ডিসটেমপার। রেস্তোরাগুলোতেও চলছে ধোয়ামুছা ও রঙ লাগানোর প্রতিযোগিতা। প্রশাসনের পক্ষে সার্বিক নিরাপত্তার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কলাতলী মোডের ‘জ ভাস্কর্য’ নতুনভাবে রাঙানোর কাচ চলছে। সব মিলিয়ে পর্যটন নগরীতে অন্তত ৫ লাখ পর্যটক সমাগম ঘটবে বলে আশা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
 
কক্সবাজারের তারকা মানের হোটেল সী-গাল এর ব্যবস্থাপক (এইচআর) হারুন অর রশিদ জানান, ৭, ৮ ও ৯ জুন ৯০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে। সেখানে বিদেশী পর্যটকেরাও রয়েছে। 

হোটেল মোটেল ওনার’স এসোসিয়েশন এর সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এবার ভিন্ন আঙ্গিকে প্রস্তুতি নিচ্ছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। সরকারি ছুটি ৯ দিন হওয়ায় বাড়তি প্রস্তুতি নিচ্ছেন সকলেই। এই দীর্ঘ ছুটিতে অনেকেই কক্সবাজারে একবার আসার চেষ্টা করবেন এমনটি মনে হচ্ছে। আমরা পর্যটকদের বরণ করে নেয়ার জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছি। আশা করা যাচ্ছে এই ছুটিতে আমাদের ব্যবসাও ভাল হবে।

হোটেল দি কক্স টুডে’র রুম ডিভিশন অফিসার আবু তালেব শাহা জানান, এমন দীর্ঘ সরকারি ছুটি কখনো হয়নি। এ ছাড়াও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পর্যটকের সংখ্যা কম ছিল। কিন্তু এখন সবকিছুই অনুকুলে রয়েছে। ইতিমধ্যে হোটেলের ৮০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে।

এদিকে হোটেল-মোটেল জোনের প্রায় প্রতিটি হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউসে চলছে সাজ সজ্জার কাজ। একটু রাঙ্গিয়েও নিচ্ছেন প্রতিটি হোটেল-মোটেল। এছাড়াও জেলা সদরের বাইরেও পর্যটন স্পট মহেশখালী, হিমছড়ি, ইনানী, দরিয়ানগর, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলো সাজছে নতুন করে।

পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ বলেছেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক মাঠে থাকবে জেলা পুলিশ। ইতিমধ্যে প্রস্ততি সভা করা হয়েছে। দর্শনীয় স্থান ও বিপণিকেন্দ্রগুলোতেও পুলিশি টহল জোরদার থাকবে। 


বিডি প্রতিদিন/০১ জুলাই ২০১৬/হিমেল-১০

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর