১ জুলাই, ২০১৬ ২০:১৫

প্রতিবেশীর সাথে মায়ের ঝগড়া, প্রাণ গেল ছয় মাসের শিশুর

শরীয়তপুর প্রতিনিধি:

প্রতিবেশীর সাথে মায়ের ঝগড়া, প্রাণ গেল ছয় মাসের শিশুর

মায়ের সাথে প্রতিবেশী এক নারীর ঝগড়ার জেরে ছয় মাসের শিশু মীম আক্তারকে প্রাণ দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার নলমুরি ইউনিয়নের ঘাটাখান গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দুপুর ১ টার দিকে বসত ঘরের পাশ থেকে মীমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

প্রতিবেশি আলাউদ্দিন খানের স্ত্রী পিয়ারা বেগমের সাথে ঝগড়ার জের ধরে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। হত্যার সাথে জরিত সন্দেহে প্রতিবেশী পিয়ারা বেগমকে জনতা আটক করে পুলিশে দিয়েছে।

গোসাইরাহাট থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গোসাইরহাট উপজেলার নলমুরি ইউনিয়নের ঘাটাখান গ্রামের দরিদ্র ভ্যান চালক বিল্লাল হোসেন রাঢ়ির ছয় মাস বয়সী মেয়ে মীম। মীমের মা শিল্পি বেগমের সাথে চার দিন আগে ঝগড়া হয় প্রতিবেশি আলাউদ্দিন মাঝির স্ত্রী পিয়ারা বেগমের। 

শুক্রবার শিল্পি বেগম শিশু মীমকে ঘরে ঘুম পারিয়ে রেখে বাইরে কাজ করতে থাকে। বেলা ১২টার দিকে ঘরে গিয়ে বিছানায় মেয়েকে দেখতে না পেয়ে খুজতে থাকেন শিল্পি। দুপুর ১টার দিকে বসত ঘরের পিছনে একটি পরিত্যাক্ত লাকরির ঘরের মধ্যে কাপর পেচানো অবস্থায় শিশু মীমের দেহ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে  পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে গোসাইরহাট থানায় নিয়ে আসেন।

মীমের দাদী সাহিদা বেগম বলেন, 'সামান্য একটু ঝগরার করনে পাসন্ডরা আমার নাতনীকে মেরে ফেলবে তা ভাবতেও পারিনি। দুধের শিশুর সাথে এমন শত্রুতা কোন মানুষ করতে পারে? আমার ছেলেটার এক মাত্র মেয়ে ছিল মীম। এমন পাষন্ড খুনীদের ফাঁসি হওয়া উচিত।'

মীমের মরদেহ পাওয়ার পর বাকরুদ্ধ হয়ে পরেছে তার মা শিল্পি বেগম। মেয়ের লাশের পাশে বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন তিনি। খবর পেয়ে কাজ ফেলে বাড়িতে ছুটে আসেন বাবা বিল্লাল হোসেন। প্রিয় সন্তানকে হারিয়ে তিনিও বিলাপ করছিলেন। প্রতিবেশী স্বজনরা তাদের সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করছেন। 

বিল্লাল হোসেন বলেন, 'আমি গরিব মানুষ, কঠোর পরিশ্রম করে পরিবার নিয়ে সুখে ছিলাম। মানুষের সাথে আমাদের তেমন কোন বিরোধ নেই। সামান্য একটি বিষয় নিয়ে আমার স্ত্রীর সাথে প্রতিবেশী পিয়ারা বেগমের ঝগরা হয়। এ কারনে তারা আমার সন্তানকে হত্যা করে লাকরি ঘরের মধ্যে ফেলে রেখেছে।'

গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, 'দুধের শিশুকে হত্যার ঘটনাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। শিশু হত্যার সাথে জরিত থাকার অভিযোগে জনতা পিয়ারা বেগম নামে এক নারীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। পুরো ঘটনাটি আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত না করে বলা যাচ্ছে না কি কারনে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে।'

 

বিডি প্রতিদিন/০১ জুলাই ২০১৬/হিমেল-২০

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর