২৫ জুলাই, ২০১৬ ১২:০৮

যশোরে জঙ্গি তালিকার সেই তুহিন নববধূসহ বাড়িতে ফিরেছেন

যশোর প্রতিনিধি:

যশোরে জঙ্গি তালিকার সেই তুহিন নববধূসহ বাড়িতে ফিরেছেন

জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত বলে যশোর পুলিশের তালিকার প্রথম সন্দেহভাজন কামরুজ্জামান তুহিন ওরফে মুন্না নববধূকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সোমবার ভোরে বাবার সঙ্গে স্ত্রী ও শ্বশুরপক্ষের তিন আত্মীয়সহ তিনি তার যশোর শহরের শঙ্করপুরের বাসায় ফেরেন। মুন্না যশোর শহরের শঙ্করপুর গোলপাতা মসজিদ এলাকার চা-দোকানী আবদুস সোবহানের ছেলে। প্রায় তিন বছর আগে তিনি নিরুদ্দেশ হয়েছিলেন। সম্প্রতি যশোর পুলিশ জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত যে ৫ জনের ছবি ও নাম দিয়ে পোস্টার বের করে, সেখানেও মুন্নার ছবি ও নাম রয়েছে। 

বাসায় ফেরার পর মুন্না বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে দাবি করেন, তিনি জঙ্গি নন। বাড়িতে এসে শুনছেন যে পুলিশ তাকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য নাম-ছবিসহ পোস্টার ছেপেছে। যশোর পুলিশের ছাপানো জঙ্গি তালিকাসম্বলিত পোস্টারে নিজের নাম ও ছবি দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন মুন্না। তিনি বলেন, ‘মায়ের ওপর রাগ করে বাড়ি ছেড়েছিলাম। তিন বছর ঢাকায় ছিলাম। একটি ডেকোরেটরের দোকানে ও প্লাস্টিক কারখানায় কাজ করি। বিয়েও করেছি, কাজ করেই খাই। কোনো ধরণের জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে আমি জড়িত নই’। 

মুন্নার বাবা সোবহান বলেন, আইপিএল জুয়ায় জড়িয়ে পড়ায় মায়ের বকুনি খেয়ে মুন্না বাড়ি ছাড়ে। পরে এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়রিও করা হয়েছিল। পরে কোতোয়ালী থানার একজন দারোগা এলাকায় তদন্তে আসেন। তিনি এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে নিশ্চিত হন যে মুন্না জঙ্গি নন। কিন্তু থানার এক কর্তা সরকারদলীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তির কথামতো তাকে জঙ্গি হিসেবে সাব্যস্ত করেন। এরপর আমার ছেলেকে জঙ্গি বলতে শুরু করে পুলিশ।

মুন্না দাবি করেন, বাড়ি ছাড়ার পর তিনি ঢাকার ইসলামবাগ এসি মসজিদ গলির এক প্লাস্টিক কারখানায় ও পরে জিঞ্জিরা খেজুরবাগ বালুরচর এলাকায় রফিকের ডেকোরেটরের দোকানে কাজ করেন। সেখানে আলাপ হয় বাংলাবাজারে বই সাপ্লায়ার মনির খানের মেয়ে ইয়াসমিন আক্তারের সঙ্গে। কিছুদিন প্রেম করার পর মাস ছয়েক আগে তাদের বিয়ে হয়।

মুন্নার বাবা বলেন, আমার ছেলে দেশদ্রোহী হলে তার সাজা হোক। কিন্তু বিনা দোষে যেন শাস্তির শিকার না হয়। তিনি বলেন, মুন্না ধর্মকর্ম খুব একটা করতো না। শুক্রবারের দিন বকাঝকা করে তাকে জুম্মার নামাজ পড়তে নিয়ে যেতাম।

এদিকে নববধূসহ মুন্নার ফেরার খবরে সোমবার সকাল থেকেই সোবহানের বাড়িতে আশপাশের লোকজন ভিড় করতে শুরু করে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, মা কমলা দীর্ঘদিন পর ছেলেকে কাছে পেয়ে নিজ হাতে খাইয়ে দিচ্ছেন। আর বাবা আবদুস সোবহান এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাদের নিয়ে তিনি পুলিশ সুপারের কাছে যাবেন। 


বিডি প্রতিদিন/২৫ জুলাই ২০১৬/হিমেল-১২

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর