১৮ আগস্ট, ২০১৬ ১৫:৫৩

সংখ্যালঘুকে ধর্ষণ, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি পরিবারের

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি:

সংখ্যালঘুকে ধর্ষণ, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি পরিবারের

নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া শেখ ফজিলাতুন্নেছা মহিলা অনার্স কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মিরা রানী সরকারকে  (২০) ধর্ষণ ও প্রতারণা করে প্রায় চার লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে ধর্ষিতার পরিবার। এ ঘটনায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। (ভুক্তভোগী নিজে মামলা করায় ও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকায় তার পরিচয় প্রকাশ করা হলো)

দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামি 'ধর্ষক ও প্রতারক' ফজলকে (৪০) বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুলিশ উপজেলার আহম্মেদপুর এলাকা থেকে আটক করেছে। মামলার আরও তিন আসামিকে দ্রুত গ্রেফতার ও আটককৃত ফজলসহ সহযোগী সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করেন ধর্ষিতার পরিবারের সদস্যরা।

ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর বাড়ি উপজেলার জোয়ারি ইউনিয়নে ও অভিযুক্ত ধর্ষক ফজলের বাড়ি গুরুদাসপুর উপজেলার খামার পাথুরিয়া গ্রামে। ফজলের পিতার নাম মো. তোতা মিয়া। বনপাড়াস্থ উপজেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ওই ছাত্রীসহ তার বড় বোন কাজলী রানী সরকার ও ছোট ভাই অশোক কুমার সরকার।

সংবাদ সম্মেলনে বড়বোন কাজলী তার বক্তব্যে বলেন, প্রতারক ফজল আমের ব্যবসায়ী হওয়ায় তাদের বাড়ির পাশে আম বাগান জিল নেয়। এই সুবাধে সে তাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করতো। পিতৃহীন পরিবারের অসহায়ত্বের সুযোগে ছোট বোন মিরা রানী সরকারকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ফজল প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে। ধর্মীয় বাধা ও ঘরে স্ত্রীসহ দুই সন্তান থাকার পরেও ফজলের কু-দৃষ্টি থেকে রেহাই পায়নি তার বোন। গত ২৪ জুলাই ফজল ও তার সহযোগী খামার পাথুরিয়া গ্রামের মোস্তফার ছেলে শাহ আলম (৪২), গেদু ব্যাপারীর ছেলে সোহরাব (৪০) ও বড়াইগ্রামের বালিয়া গ্রামের ফজের সরকারের ছেলে দেলু বেপারী (৪৫) কৌশলে মিরাকে দিয়ে তার স্বাক্ষরিত চেক নিয়ে বনপাড়া সোনালী ব্যাংক থেকে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা তুলে নেয়। এতোগুলো টাকা তুলতে গেলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার কাছ থেকে ফোনে কোন অনুমতিও গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করেন কাজলী। পরবর্তীতে ফজল সহযোগীদের সহায়তায় মিরাকে বগুড়া জেলা শহরের চেলপাড়া (হিন্দু পাড়া) এলাকার ভুট্টুর বাড়িতে নিয়ে যায় এবং সেখানে সারারাত ফজল কয়েকবার তাকে ধর্ষণ করে। পরেরদিন সকালে বিয়ের কথা বলে বগুড়া কোর্টে বোনকে নেওয়ার পর সেখান থেকে প্রতারক ফজল পালিয়ে যায়। এ ঘটনা বোন মিরা মোবাইল ফোনে অপর বড় বোন বিজলী রানী সরকারকে জানালে বগুড়া থানা পুলিশের সহায়তায় তিনি মিরাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং পরের দিন (২৬ জুলাই) মিরা নিজেই বাদী হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় চার জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
 
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম জানান, মামলা দায়ের করার দিনই ধর্ষিতার মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অপর আসামিদের আটকের চেষ্টা চলছে।  

বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর