২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৭:২৬

দাঁড়িয়ে থাকা বাসকে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কা, নিহত ৫

পরীক্ষা শেষ করা হলো না সুস্মিতের

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দাঁড়িয়ে থাকা বাসকে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কা, নিহত ৫

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ত্রুটিপূর্ণ একটি বাস মেরামত করার সময় দাঁড়িয়ে থাকা পাঁচ যাত্রী কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় নিহত হয়েছেন। শনিবার ভোর সাড়ে ৫ টার সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের বড়তাকিয়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন: চট্টগ্রাম কর্ণফুলী পেপার মিলের (কেপিএম)’র মহাব্যবস্থাপক (এমটিএস) প্রকৌশলী সৈয়দ আহমদ, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাওকির তাজাম্মুল সুস্মিত, শাহিদা আক্তার, কাভার্ড ভ্যানের সহকারী মিজানুর রহমান মাখন এবং বাস সহকারী মো. আলী। 

জোরারগঞ্জ চৌধুরীহাট হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ ফরিদ উদ্দিন জানান, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসের ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেলে তা রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে মেরামত করা হচ্ছিল। এসময় একইমুখী একটি কাভার্ড ভ্যান বাসটির পেছন থেকে ধাক্কা দিলে এটি রাস্তায় দাঁড়ানো যাত্রীদের ওপর উঠে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচজন মারা যান।

এ ব্যাপারে মিরসরাই প্রতিনিধি জানান, শনিবার ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড়তাকিয়া বাজার এলাকায় শ্যামলী পরিবহণের চট্টগ্রামগামী একটি বাস যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দাঁড়ানো অবস্থায় ছিল। ত্রুটি সারাতে মেরামতে ব্যস্ত ছিল গাড়ির চালক ও সহকারী। ওই বাসের যাত্রীরা অপেক্ষা করছিলেন অন্য কোন গাড়িতে করে চট্টগ্রাম নগরীতে যাওয়ার জন্য। এসময় চট্টগ্রামগামী বেপরোয়া গতির একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই যাত্রীবাহী বাসের পেছন দিক থেকে ধাক্কা দেয়। এতে বাসের ৩ যাত্রী, বাসের সহকারী ও কাভার্ড ভ্যানের সহকারী নিহত হন। পরে জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ, মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স ও সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা চালায়। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের লিডার আবু মোহাম্মদ শরীফের নেতৃত্বে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিসের ৫ ইউনিট উদ্ধার তৎপরতা চালায়।

পরীক্ষা শেষ করা হলো না সুস্মিতের :

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগের প্রথম বিভাগের শিক্ষার্থী তাওকির তাজাম্মুল সুস্মিত। আগামীকাল রবিবার থেকে তার অসমাপ্ত সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা ছিল তার। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস সেমিস্টার পরীক্ষা শেষ করার আগেই, জীবনের সব পরীক্ষার পাঠ চুকিয়ে সুস্মিত চলে গেলেন পরকালে। শনিবার ভোরে মিরসরাইয়ে কাভার্ড ভ্যান চালকের বেপরোয়ার গতি কাছে হার মানে সুম্মিতের জীবনের গতি। 

সুস্মিতের বাবা আবদুস সাত্তার একজন পুলিশ সদস্য। তিনি গাজীপুরে কর্মরত আছেন। তারা থাকেন ঢাকার মিরপুর ৭ নম্বরে। শুক্রবার রাতের ছেলেকে চট্টগ্রামের বাসে তুলে দিয়েছিলেন সাত্তার। পরদিন দুপুরে সন্তানের লাশ নিতে চট্টগ্রাম আসতে হয় তাকে। এসময় তিনি বলেন, ‘বেপরোয়ার চালকের হাতে আমার ছেলেকে জীবন দিতে হয়েছে। ছেলেকে হারিয়েছি, কিছু বলার নেই। সবাই আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।’

 

বিডি-প্রতিদিন/ ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর