২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৫:৫৭

যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত রহিমের বাড়িতে শোকের মাতম

কুমিল্লা প্রতিনিধি:

যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত রহিমের বাড়িতে শোকের মাতম

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয় কুমিল্লার তিতাসের আবুল কালাম রহিমের (৫৫) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তিনি উপজেলার বাতাকান্দি গ্রামের মৃত ছাদিরুজ্জামানের ছোট ছেলে। ২৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ১২টায় লস অ্যাঞ্জেলসের শেরম্যান ওয়েতে অবস্থিত লিকোয়ার মার্টে সুপারশপ বন্ধ করার সময় দুই সন্ত্রাসীর গুলিতে তিনি নিহত হন। তিনি প্রায় ১৬ বছর যাবৎ পরিবার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে আবুল কালাম সকলের ছোট।  

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধের সময় মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন আবুল কালাম ওরফে আবদুর রহিম। বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে বঙ্গবন্ধুর গাড়ির ঠিক সামনের ছবিতে ন্যাড়া মাথার যে তরুণকে দেখা যায় তিনিই হলেন এ আবুল কালাম রহিম। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে রেজা আলী প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞাপনী সংস্থা বিটপীতে আবুল কালাম যোগ দেন। সেখানে কাজের পাশাপাশি বাটাসহ একাধিক ব্র্যান্ডের মডেল হয়েছিলেন তিনি। এছাড়া একজন ফুটবলার হিসেবেও এলাকায় বেশ জনপ্রিয় ছিলেন আবুল কালাম। তার চাচা বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রথম চিফ ইঞ্জিনিয়ার খালেদ সালাহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গেও বেশ কিছুদিন কাজ করেন বাংলাদেশ টেলিভিশনে। পরবর্তীতে জাপানে কয়েক বছর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হন তিনি।

কুমিল্লার তিতাসের বাতাকান্দির বাসিন্দা মরহুম ছাদিরুজ্জামানের তিন মেয়ে ও তিন ছেলেদের মধ্যে বড় নাদিরুজ্জামান, মেঝো আবদুল কাদিরুজ্জামান অনেক পূর্বেই মৃত্যুবরণ করেন। তিন মেয়ের মধ্যে বড় সালেহা আক্তার বর্তমানে তিতাসে স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করছেন। মেঝো হালিমা আক্তার আমেরিকা প্রবাসী। ছোট জাহানারা আক্তার চাঁদপুরের হাজিগঞ্জে স্বামীর সাথে বসবাস করছেন। আবুল কালাম রহিমের তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। ছেলে ফাহিম কালাম, ছোট মেয়ে তৃষ্ণা কালাম ও স্ত্রী শেলী কালামকে নিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতেন। বড় মেয়ে সম্প্রতি এমবিবিএস পাস ফাহমিদা কালাম পুতুল এবং মেঝো মেয়ে আশা কালাম বর্তমানে ঢাকার খিলগাঁও বসবাস করছেন। 

নিহতের চাচাতো ভাই আতিকুজ্জামান জানান, ছোটবেলা থেকেই আবুল কালাম ছিল নম্র, ভদ্র স্বভাবের। ঢাকা থেকে বাড়িতে আসলে সে সকল মুরুব্বিদের পা ছুঁয়ে সালাম করতো। সমবয়সীদের সাথে সারাক্ষণ ফুটবল আর আড্ডায় মেতে থাকতো। নিহতের খবর পেয়ে সকল আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। এদিকে আগামী সপ্তাহে নিহতের লাশ বাংলাদেশ এসে পৌঁছাবে বলে জানা গেছে। তাকে ঢাকা খিলগাঁওয়ে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।


বিডি প্রতিদিন/২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর