৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৮:৫৫

চুরির অভিযোগে রডের সাথে বেঁধে শিশুকে নির্যাতন

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

চুরির অভিযোগে রডের সাথে বেঁধে শিশুকে নির্যাতন

বাগেরহাটে ৭ বছরের এক শিশুকে চুরির অভিযোগে লোহার রডের সাথে বেধে নির্মম নির্যাতন ঘটনা ঘটেছে। মংলা শহরের শ্রমক্যাণ রোডের দিনমজুর শামীমের ছেলে ৭ বছরের ছেলে শাকিলের উপর শুক্রবার দুপুরে টেডার্স মসজিদ সামনের রাস্তায় দুটি লোহার রড কুড়িয়ে পায় শাকিল। এ রড দুটি নিয়ে মংলা শহরের মেসার্স রফিকুল ইসলাম আয়রন স্টোরের সামনে একটি ভাঙ্গারীর দোকানে বিক্রি করতে যায় শাকিল।

এ সময় ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী আবুল হোসেন (৫০) ও ও তার কর্মচারী শুক্কুর (৪৮) চুরির অভিযোগ এনে শিশু শাকিলকে লোহার রডের সাথে বেধে ফেলে। শুরু হয় শাকিলের প্রতি নিষ্ঠুর ও নির্মম নির্যাতন। যা দেখে আশপাশের লোকজন হতবাক হয়ে পড়ে। অনেকে শিশুটি বাঁচাতে ছুটে গেলেও মন গলেনি ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী আবুল ও শুকুরের। এক পর্যায়ে শিশু শাকিলকে হাত বেঁধে পিটিয়ে রোদে বসিয়ে রাখা হয়।
 
পরে খবর পেয়ে মংলা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শাকিলকে উদ্ধার করে এবং এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শুক্কুর হোসেনকে আটক করে। পরে শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দুপুরে তার পরিবারে কাছে পাঠিয়ে দে্যা হয়। বিকালে এ ঘটনায় শিশু নির্যাতনের অভিযোগে মংলা একটি মামলা হয়েছে।

মংলা থানা পুলিশের শহর উপ-পরিদর্শক (টিএসআই) উত্তম চ্যাটার্জি বলেন, 'দুপুর ১২টার দিকে মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে আমি তাৎক্ষণিক মংলা ট্রেডার্স মসিদ রোডে সেমার্স রফিকুল আয়র ষ্টোরের সামনে আসি। এ সময় দেখি চুরির অভিযোগে আমানবিক ভাবে শিশু শাকিলকে হাত পিছনে দিয়ে বেঁধে রোদে বসিয়ে রেখেছে ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী আবুল হোসেন ও তার কর্মচারী শুক্কুর। পরে শিশু শাকিলকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়'।

প্রত্যক্ষদর্শী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, 'রড চুরির অভিযোগে বেলা ১২টারদিকে শিশু ছেলেটিকে মেরে বেঁধে তার পায়ের উপর রড দিয়ে তপ্ত রোদে বসিয়ে রাখা হয়। ব্যাপারটি মর্মান্তিক দেখে এ সময় কয়েকজন ছেলেটিকে উদ্ধার করতে চাইলেও বাধা দেয় ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী আবুল হোসেন ও তার কর্মচারী শুক্কুর আলী'।

এ বিষয়ে নির্যাতনের শিকার শিশু শালিক বলেন, 'আমি দুটি ছোট  রড রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছি। যখন বিক্রি করতে তাদের কাছে যাই তারা আমাকে টাকা না দিয়ে য়ামি চুরি করেছি বলে বলে মারপিট করে এবং  রোদে বেঁধে রাখে। অনেক চিৎকার করলেও তারা আমারে ছাড়ে নাই। পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করেছে'।

মংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ লুৎফর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, 'শিশু নির্যাতনের ঘটনায় থানায় শিশুটির পিতা নির্যাতন আইনে দুইজনকে আসামী করে একটি মামলা করেছে। এ ঘটনায় ভাঙ্গারী দোকানের কর্মচারী শুক্কুরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে অপর আসামী আবুল হোসেকেকে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে'।

 

বিডি-প্রতিদিন/৩০সেপ্টেম্বর, ২০১৬/তাফসীর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর