৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ২০:৫১

পাবনায় পুলিশ কনষ্টেবলের বিরুদ্ধে নিজ স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ

সৈকত আফরোজ আসাদ, পাবনা

পাবনায় পুলিশ কনষ্টেবলের বিরুদ্ধে নিজ স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ

পাবনায় এক পুলিশ কনষ্টেবলের বিরুদ্ধে তার স্ত্রীকে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পাবনা সদর থানায় আজ শুক্রবার দুপুরে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী সাদিয়া আকতার হালিমা একটি মামলা দায়ের করেন।
 
মামলার এজহারের বরাত দিয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুস মুন্সি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, 'পাবনা পুলিশ লাইনের কনষ্টেবল রুবায়েত ফেরদৌস (কনষ্টেবল নং ৭৮৫) ঢাকায় কর্মরত থাকার সময়ে ২০১১ সালের শুরুর দিকে দক্ষিন কামরাঙ্গীর চর এলাকার হাবিবুল্লাহ’র মেয়ে সাদিয়ার সাথে একটি রেষ্টুরেন্টে পরিচয় হয়। তারপর উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হলে ওই বছর ৪ এপ্রিল কামরাঙ্গীর চরে পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর রুবায়েত বেশ কয়েক জায়গায় চাকুরী করলেও স্বামী-স্ত্রী মিলে পাবনায় আসে বছর খানেক পূর্বে। এর মধ্যে তাদের  একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়'।

বিয়ের পর থেকেই স্বামী রুবায়েত পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সামান্য কথা কাটাকাটি হলেই সাদিয়াকে শারিরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতো। এরই জের ধরে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে যৌতুক হিসেবে ২ লাখ টাকা বাবার বাড়ি থেকে আনতে বললে তাদের মধ্যে ঝগড়া ঝাটি হয়। এ সময় সাদিয়াকে ব্যাপক মারধোর করে মারাত্মক জখম করে। পরে সে জখম অবস্থায় বাবার বাড়ি ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার পর সুস্থ হলে সে শুক্রবার দুপুর স্বশরীরে এসে পাবনা থানায় একটি এজহার দায়ের করে।

প্রতিবেশী ভাড়াটে কয়েকজন মহিলা বলেন, মানুষ এভাবে বউকে নির্যাতন করতে পারে আমাদের ধারনা ছিল না। তবে ওই পুলিশ সদস্যের এমন শাস্তি হওয়া প্রয়োজন যাতে কেউ আর কোন দিনে এভাবে কোন নারীকে নির্যাতনের সাহস না পায়।
 
এ বিষয়ে নির্যাতনের স্বীকার সাদিয়া অভিযোগ করে বলেন, 'পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সামান্য কথা কাটা কাটি হলেই সে বিভিন্ন মেয়েদের সাথে আমার সামনে অবৈধ কথাবার্তা বলে। আমাকে রুবায়েত ছেড়ে চলে যেতে বলে, অন্য আরেকজনকে বিয়ে করার হুমকী দিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। ২ বছরের সন্তান না থাকলে হয়তো আমি চলেই যেতাম, যে কোন কাজ কর্ম করে জীবিকা নির্বাহ করতাম। তবু এতো নির্যাতন সহ্য করতে হতো না। সাদিয়া সরকারী বদরুন্নেসা কলেজ থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে সম্মান ডিগ্রী সমাপ্ত করেছেন'।
 
অভিযুক্ত কনষ্টেবল রুবায়েত ফেরদৌস বলেন, 'পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথা কাটা কাটির এক পর্যায়ে এমনটি হয়েছে। আমার সেই সময় মাথা ঠিক ছিল না। তবে বিষয়টির জন্য সে অনুতপ্ত বলেও জানান'।
 
এ ব্যাপারে পাবনার পুলিশ সুপার আলমগীর কবির বলেন, বিষয়টি অবশ্যই একটি ন্যক্কারজনক, 'সামান্য বিষয় নিয়ে নারী নির্যাতন কোন ভাবেই সমর্থন যোগ্য হতে পারে না। অবশ্যই বিভাগীয় তদন্ত সাপেক্ষে দোসীর শাস্তি হবে। ইতিমধ্যেই পাবনা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। ওই কনষ্টেবলের বিরুদ্ধে আমাদের নিকট বিভিন্ন মাদক দ্রব্য সেবনেরও অভিযোগ রয়েছে'।
 

 

বিডি-প্রতিদিন/৩০সেপ্টেম্বর, ২০১৬/তাফসীর

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর