চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুস্থ ও অসহায় মানুষের চাল নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শিবগঞ্জে একাধিক সচ্ছল ব্যক্তি পেয়েছেন দুস্থদের চালের কার্ড। পেয়েছেন জনপ্রতিনিধিরাও। পাননি অনেক দুঃস্থ পরিবার। আর দুস্থদের কার্ডের তালিকা নিয়েও রয়েছে ব্যাপক অনিয়ম।
এদিকে বিভিন্ন অজুহাতে চাল কম দিয়ে ফায়দা লুটছে ডিলাররা। কোন কোন ডিলার খাদ্য গোডাউন থেকে চাল বের হবার পর গুদামের আশপাশেই একটি চিহ্নিত সিন্ডিকেটের কাছে চাল বিক্রি করে দিচ্ছেন এমন অভিযোগও রয়েছে।
জানা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নে অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। ওই ইউনিয়নে অনেক সচ্ছল মানুষ কার্ড পেয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। ৬নং ওয়ার্ডের তোহরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সেমিয়ারা বেগম, জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ছবিয়ারা বেগম স্বামী-স্ত্রী উভয়েই কার্ড পেয়েছেন।অন্যদিকে আরজালের ছেলে কাদির ও রুবেদার দু'টি করে কার্ড আছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে ডিলার হাবিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তালিকা তৈরিতে তাদের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে চাল বিতরণের ক্ষেত্রে আধা কেজি চাল কম দেয়ার কথা তিনি স্বীকার করে বলেন, এজন্য ৫ টাকা করে ফেরত দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে শাহবাজপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. খাদেমুল ইসলাম জানান, শাহাবাজপুরে ১০ টাকা কেজি দরে চালের কার্ড তৈরি, ওজনে কম দেয়া, একমাসের চাল দিয়ে কার্ডের দুই ঘরে কার্ডধারীদের ২টি টিপসই নেয়াসহ সবক্ষেত্রে চরম অনিয়ম ও দুর্ণীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে মনাকষা ইউনিয়নে কার্ড তৈরিতেও অনিয়ম ও দুর্ণীতি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। কার্ডের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে ৯টি ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বারসহ ১২ জন সদস্যের মধ্যে ৭২০টি কার্ড অর্থাৎ ৬০টি করে কার্ড ভাগ করে দেয়া হয়েছে এবং বাকিগুলো স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মাঝে বন্টন করে দেয়া হয়েছে। এ ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের রানীনগর হঠাৎপাড়া গ্রামের স্বচ্ছল ব্যক্তি সোহবুল দুস্থদের ৩টি কার্ড পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মনাকষা ইউপির ১নং ওয়ার্ডের মুনজুর আলি জানান, গত ১১অক্টোবর মনাকষা বাজারে সাজেমান ডিলারের নিকট হতে ৩’শ টাকা দিয়ে তিনি সাড়ে ২৮কেজি চাল পেয়েছেন।
তবে সাজেমান ডিলার জানান, গোডাউন থেকে চাল উত্তোলন করার সময় চাল কম দেয়ায় আধা কেজি করে চাল কম দেয়া হচ্ছে। এদিকে চাল ওজনে কম দেয়ার ব্যাপারে শিবগঞ্জ খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী বলেন, গোডাউন থেকে বস্তার ওজন বাদ দিয়ে সঠিক ওজনে চাল দেয়া হয়। সেহেতু চাল কম দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ