৫ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১২:০২

৫ বছর ধরে শিকলে বন্দী রেহেনা

পার্বতীপুর (দিনাজপুর)প্রতিনিধি:

৫ বছর ধরে শিকলে বন্দী রেহেনা

মস্তিষ্ক বিকৃতির কারণে শিকলে বন্দী জীবনযাপন করছেন রেহেনা বেগম (৪০)। দীর্ঘ আট বছর ধরে অসুস্থ রেহেনার প্রথম দিকে চিকিৎসা শুরু হলেও টাকার অভাবে কিছুদিন পর তার বন্ধ হয়ে যায়। রেহেনা বেগমের বাড়ি দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচন্ডি ইউনিয়নে ১নং ওয়ার্ডের ভাটিপাড়া গ্রামে। 

আলা বকসের চার সন্তানের মধ্যে সবার বড় রেহেনা। ২৫ বছর আগে মনমথপুর ইউনিয়নের দেগলাগঞ্জ গ্রামের জমির উদ্দিনের সাথে রেহেনার বিয়ে হয়। কয়েক বছর বছর মাথায় স্বামী মারা গেলে মানসিক রোগে আক্রান্ত হন তিনি। আতিকুল (২৪) ও সাদেকুল (১৮) নামে দুই সন্তান জননী রেহেনা। তাদের একজন মুরগীর ফার্মে কাজ করে এবং অন্য জন ভ্যান চালক। সন্তানরা খোঁজ খবর না নেয় না রেহেনার। 

এখন বাবার বাড়িতে আছে সে। তার থাকার জায়গাটি নোংরা, স্যাঁতস্যাঁতে। সব সময় পায়ে শিকল বাঁধা থাকে রেহেনার। সব সময় বিড়বিড় করে আপন মনে কথা বলে। ছেড়ে দিলে লোকদের উপর চড়াও হয় ও ভাঙচুর করে। 

রেহেনার পরিবারের সদস্যরা জানায়, কোনোও ব্যক্তি আর্থিকভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে রেহেনার সুস্থ জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা আছে।

পিতা আলা বকস বলেন, 'ওর দুই সন্তানের একজনও খবর নেয় না।' রেহেনার ভাই অব্দুল মজিদ বলেন, 'পাইশা কড়ির কারণে চিকিৎসা বন্ধ হয়া আছে। যদি কাইয়ো হামাক টাকা দিলে চিকিৎসা করমো। ওর ছেলেরা ধার ধারে না। এত ডাক ডাকাছি কোন দিন আইসে নাই। প্রায় ৪/৫ বছর থাকি এটে আছে। একটা ডাক্তার দেখাই ছিনো মেলা পাইশা করি খরচ। প্রায় ২০/৩০ হাজার টাকার  কথা বলেছে ।' ( মাঝে রেহেনাকে ডাক্তার দেখিয়েছি। তিন/চার বছর আগে একবার হারিয়ে যায়। অর্থের কারণে ওর চিকিৎসা বন্ধ হয়ে আছে। কেউ অর্থ সাহায্য করলে চিকিৎসা করাতে পারি। ওর ছেলেরা খবর নেয় না। অনেক ডাকা ডাকির পরও আসেনি।) 

বিডি প্রতিদিন/৫ ডিসেম্বর, ২০১৬/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর