৮ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১১:৩৫

গণধর্ষণের বিচার না পেলে সপরিবারে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত

কালকিনি (মাদারীপুর) প্রতিনিধি:

গণধর্ষণের বিচার না পেলে সপরিবারে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ডাসার থানার গোপালপুর এলাকার পূর্ব পূয়ালী গ্রামে ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে লালন বেপারী (১৮), ফুরকান ফকির (২১), মনির ফকির (২১) ও আরশাদ ফকির (২০)। এ ব্যাপারে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পিতা ডাসার থানায় মামলা দিতে গেলে ধর্ষণ মামলা না নিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা নেয়া হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হলে বর্তমানে মামলাটি ধর্ষণ হিসেবেই তদন্ত করা হচ্ছে বলে ডাসার থানার অফিসার ইনচার্জ এমদাদুল হকের বক্তব্য। 

অপরদিকে মামলা তুলে না নিলে অসহায় পরিবারটিকে গ্রামছাড়া করা হবে বলে অভিযুক্ত বখাটেরা ও তাদের পরিবার হুমকি দিচ্ছে বলে ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ। আর এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হলে সপরিবারে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই মেয়ের পরিবার। গণধর্ষণের শিকার হয়ে লোকলজ্জার ভয়ে সেই ছাত্রী বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালালে তাকে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

ভুক্তভোগী পরিবার ও গ্রামবাসী জানায়, গত ৩০ অক্টোবর জীবিকার তাগিদে স্কুল ছাত্রীর পিতা কুন্ডুবাড়ির মেলায় চটপটি বিক্রি করতে যায় এবং মা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য বরিশাল নেয়া হয়। এসময় বাড়িতে স্কুল ছাত্রী একা ছিল। রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘর থেকে বের হলে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা বখাটেরা তাকে গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে পাশের বাঁশ বাগানে নিয়ে যায় এবং পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় তার পিতা থানায় ধর্ষণ মামলা করতে গেলে গ্রামের কিছু মাতুব্বর ধর্ষণ চেষ্টা মামলা সাজিয়ে এনে স্বাক্ষর নেয়। আর ধর্ষণ মামলা হয়ে যায় ধর্ষণ চেষ্টা মামলা। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হলে এবং ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিলে সেই স্কুল ছাত্রী রাগে অভিমানে এবং লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।

এ ব্যাপারে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পিতা, মাতা ও ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রী অভিযোগ করে বলেন, ‘ আসামি ও তাদের পরিবারের লোকজন আমাদের গ্রামছাড়া করার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমরা ন্যায় বিচার না পেলে সপরিবারে আত্মহত্যা করব।’

এ ব্যাপারে ডাসার থানার অফিসার ইনচার্জ এমদাদুল হক বলেন, ‘সেই ছাত্রীর পরিবার প্রথমে ঘটনাটি কিছুটা চাপা থাকায় ধর্ষণ চেষ্টা মামলা নেয়া হয়েছে। কিন্তু তদন্ত করতে গিয়ে দেখা গেছে সেটি গণধর্ষণের বিষয়। আর এ ব্যাপারে তার ডাক্তারী পরীক্ষাও করানো হয়েছে। তাই এখন মামলাটি ধর্ষণ মামলা হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং আসামিদের গ্রেফতারে জোর চেষ্টা চলছে।’


বিডি-প্রতিদিন/ ০৮ ডিসেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর