৮ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১৭:৫২

নদীর চরে পেঁয়াজ চাষে ভূমিহীন কৃষকের ভাগ্যবদল

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

নদীর চরে পেঁয়াজ চাষে ভূমিহীন কৃষকের ভাগ্যবদল

আত্রাই নদীতে জেগে ওঠা চরে পেঁয়াজ চাষ করেছেন ভূমিহীন দরিদ্র কৃষকেরা। আর এ নদীর চরে পেঁয়াজ চাষেই ভাগ্যবদল হয়েছে ভূমিহীন এসব কৃষকের। 

দিনাজপুরের বীরগঞ্জের শতগ্রাম ইউনিয়নের কাশিমনগর গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া আত্রাই নদীর উৎসমুখ ভারতের উজানে বাঁধ নির্মাণ করার ফলে শুকনো মৌসুমে এসব নদীতে চর পড়ে যায়। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নদী তীরবর্তী ভ‚মিহীনরা এ চরকেই চাষাবাদের মাধ্যম হিসেবে বেছে নেয়। আর নদীর চরে পেঁয়াজ চাষ করে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতাও এনে দিয়েছে তাদের।

শুকনো মৌসুমে প্রতিবারের মতো এবারেও আত্রাই নদীর চরে পেঁয়াজ চাষ করেছেন স্থানীয় কৃষককেরা। বর্তমানে রোপন পরবর্তী পরিচর্যায় ব্যস্ত তারা। পেঁয়াজ গাছের সবুজ রঙে বদলে গেছে নদীর চিত্র। অধিকাংশ চাষী গত ৩/৫ বছর থেকে জেগে ওঠা চরে পেঁয়াজ চাষ করছেন। এ নভেম্বর মাস থেকে নদীতে পানি কমে গেলে বালু চরে পেঁয়াজ চাষের উপযোগী করে তোলার জন্য নেমে পড়েন চাষীরা। 

পেঁয়াজ চাষীদের সাথে কথা হলে তারা জানায়, নিজস্ব জমি না থাকায় তারা নদীর জেগে ওঠা চরে চাষাবাদ করে থাকেন। বর্ষার সময় পানির সাথে যে পলি পড়ে তা খেতের সার হিসেবে কাজে লাগে। তাই অতিরিক্ত সার দিতে হয় না এবং সেচের প্রয়োজন হয় না বলেই চলে। এ কারণে নদীর চরে পেঁয়াজ চাষ লাভ জনক।

ভূমিহীন এলাহাজ মিয়া জানান, নদীতে পেঁয়াজ চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয় প্রায় ১০ হাজার টাকা। বিপরীতে এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আসে ৩৫ থেকে ৪০ মণ। তা দিয়েই আমাদের কয়েক মাসের খাবারের জোগান হয়। 

কৃষক মো. আব্দুর সহীদ মিয়া জানান, এর আগে এই চরে ধান চাষ করেছিলেন। গত বছর থেকে পেঁয়াজ চাষ করছেন। ভালোই লাভ হয়েছে পেঁয়াজ চাষে। আবাদের টাকা দিয়ে সন্তানের বই, খাতা, পোশাক। সংসারের অভাব দুর হয়েছে এই পেঁয়াজ চাষে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম জানান, ২ মেয়ে ও ১ ছেলেকে নিয়ে স্ত্রীসহ প্রায় ১০ বছর ধরে বাস করছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পে। নিজের জমি না থাকায় বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীতে গত কয়েক বছর থেকে পেঁয়াজ চাষ করছি। পেঁয়াজ আবাদের আয় থেকে পরিবারে স্বচ্ছলতা এসেছে। মেয়েদের বিয়ে দিতে হবে। সে কথা মাথায় রেখে পেঁয়াজ চাষের আয় থেকে প্রতি বছর  কিছু টাকা সঞ্চয় করি। 

বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নদীর চরে চাষাবাদ এখন বেশ চোখ পড়ছে। স্থানীয় ভূমিহীদের দারিদ্রতা দূরীকরণের ক্ষেত্রে নদীর চরে চাষাবাদ বেশ ভ‚মিকা রাখছে। এতে অনেকের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। 

 


বিডি-প্রতিদিন/ ০৮ ডিসেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর