৯ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১৫:৩৮

চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চলছে খাল ভরাট

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চলছে খাল ভরাট

 

 

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরকারী নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অবাধে চলছে খাল-বিল ও জলধার ভরাটের প্রতিযোগিতা। ফলে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট এই খাল-বিল ও জলধারগুলো ক্রমান্বয়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্যতা নষ্ট হচ্ছে তেমনি পানি নিস্কাশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে জনদুর্ভোগ বাড়ছে। 

জানা গেছে, জেলা শহরের চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী মহাসড়ক ঘিরে মহানন্দা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় প্রায় শত বছরের প্রাচীন দু’টি নয়নজুলি (ডোবা) ছিল এবং ওই এলাকার বৃষ্টি ও আবাসিক বাড়ী-ঘরের পানি ড্রেনের মাধ্যমে দু’টি নয়নজুলিতে এসে পড়তো। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কতিপয় অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহযোগিতা ও প্রশাসনের উদাসীনতার সুযোগে কয়েক বছরের মধ্যে নয়নজুলি ভরাট করে নিয়েছে একটি জালিয়াত ও প্রভাবশালী চক্র। 

ফলে এখন অল্প বৃষ্টিতেই শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এব্যাপারে কয়েক বছর আগে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি ও জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির একাধিক সভায় এই বিষয়ে অভিযোগ উঠলে প্রথমে তৎকালীন সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম ওই নয়নজুলি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নয় বলে সভাকে জানান। পরবর্তী সভায় একজন সাংবাদিক ও এসিল্যান্ড (সদর) ওই নয়নজুলিটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের হুকুমদখলকৃত সম্পত্তি বলে তথ্য প্রমাণ দিয়ে সভাকে অবহিত করেন। 

পরে ওই নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, নয়নজুলিটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের সম্পত্তি হলেও একটি জালিয়াত চক্র নিজেদের নামে রেকর্ড করে নিয়েছে। ওই সভার সভাপতি তৎকালীন জেলা প্রশাসক বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কার্য়ালয়ের মহাপরিচালক কে.এম আলী আজম ক্ষোভ প্রকাশ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে দ্রুত রেকর্ড সংশোধনের মামলা করার নির্দেশ দেন। 

কিন্তু দীর্ঘদিনেও বিভিন্ন অজুহাতে মামলা করা হয়নি। অন্যদিকে আতাহার-আমনুরা সড়কের দু’ধারে বিশাল এলাকাজুড়ে রয়েছে অতি প্রাচীন জলধার। ওই জলধারের দু’পাশে রয়েছে জেলা পরিষদের মাটি। কিন্তু কয়েক মাস থেকে জলাধারের মালিক দাবিদার বেনু নামের একজন মাটি ভরাট করছেন। জলধারটি পাশ্ববর্তী সড়কের চেয়ে উঁচু করে ভরাট করা হচ্ছে।

এতে করে ভরাটকৃত জমির পানি গড়ে সড়কে জমা হচ্ছে। ফলে কোটি টাকা ব্যয়ে সদ্য সংস্কারকৃত সড়কটির স্থায়িত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। এব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও প্রাচীন জলধারটির ভরাট কার্যক্রম বন্ধ করা হয়নি। 

উল্লেখ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার বার তার বিভিন্ন বক্তৃতায় বলেছেন পরিবেশের ভারসম্য রক্ষার্থে কোন খাল-বিল ও জলাধার বন্ধ করা যাবে না। এমনকি সেই খাল-বিল ও জলাধার ব্যক্তি মালিকানার হলেও সেগুলো ভরাট করা যাবেনা। অথচ এ ব্যাপারে প্রশাসনের অবহেলা সবার নজরে এসেছে। স্থানীয়রা ব্যাপারটিকে প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন। 

 

বিডি প্রতিদিন/৯ ডিসেম্বর ২০১৬/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর