১৮ জানুয়ারি, ২০১৭ ১২:৫৭

মাদারীপুরে আওয়ামী লীগে নতুন করে গ্রুপিং শুরু

বেলাল রিজভী, মাদারীপুর:

মাদারীপুরে আওয়ামী লীগে নতুন করে গ্রুপিং শুরু

মাদারীপুরে আওয়ামী লীগে নতুন করে শুরু হয়েছে গ্রুপিং। ঐক্যবদ্ধ নৌমন্ত্রী শাজাহনা খান, সৈয়দ আবুল হোসেনসহ হেভিওয়েট তিন নেতা। এতে করে কোনঠাসা হয়ে পড়ছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম। 

গত সংসদ নির্বাচনে মাদারীপুর-৩ (মাদারীপুর সদরের একাংশ এবং কালকিনি) সৈয়দ আবুল হোসেনকে বাদ দিয়ে বাহাউদ্দিন নাছিমকে মনোনয়ন প্রদান করা হয়। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ নির্বাচিত হন বাহাউদ্দিন নাছিম। এরপর থেকে মাদারীপুর সদর আসনে (মাদারীপুর সদরের একাংশ ও রাজৈর উপজেলা) তেমন গ্রুপিং ছিলো না। 

কিন্তু গত ইউপি নির্বাচন এবং জেলা পরিষদ নির্বাচেন শাজাহান খান পন্থি এবং নাছিম পন্থিরা মাদারীপুর সদরের বিভিন্ন ইউনিয়নে একে অপরের বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। একারণে নতুন করে আবার শুরু হয় গ্রুপিং। এর আগে শাজাহান খান আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ১৯৯১ সালে সাংসদ নির্বাচিত হন। এরপর তাঁর পরিবার মাদারীপুরের রাজনীতি ও ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণে নিতে থাকে। ১৯৯৬ সালে দল ক্ষমতায় গেলে আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী হন। সেই সময় থেকেই মাদারীপুরে আধিপত্ত্য বিস্তার ও  ঠিকাদারিসহ নানা ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এই দুই নেতার মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। 

এদিকে গত সংসদ নিবাচনের পর থেকেই আবুল হোসেন এবং বাহাউদ্দিন নাছিমের সাথে স্নায়ুযুদ্ধ চলে আসছিলো। বাহাউদ্দিন নাছিম সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন পন্থি লোকদের পদ শুন্য ও বহিস্কার শুরু করেন। একারণে আবুল হোসেন পন্থিরা নৌমন্ত্রীকে কালকিনির রাজনীতিতে নিয়ে তাদের পাল্লা ভারি করার চেষ্টা করছেন বলেই মনে করেন রাজনৈতিক মহল। 

এছাড়াও বাহাউদ্দিন নাছিমের কারণে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ড.আব্দুস সোবাহান গোলাপ তার নিজ এলাকা কালকিনিতে তেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি। এসব কারণে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, আবুল হোসেন ও গোলাপ ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাহাউদ্দিন নাছিমকে ঠেকাতে রাজনীতির মাঠে নেমেছেন বলেই মনে করছেন বোদ্ধারা।

সম্প্রতি কালকিনি এলাকায় নৌমন্ত্রী শাজাহান খান কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। ওইসব অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন নাছিম, উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কালকিনি আওয়ামী লীগের উল্লেখযোগ্য কোন নেতা উপস্থিত ছিলেন না। 

অপর দিকে আবুল হোসেন পন্থি পদ বঞ্চিত নেতারা শাজাহান খানের সাথে মঞ্চে থেকে বক্তৃতা দেন। এতে গ্রুপিং আরো প্রকটরুপ ধারন করে। এছাড়াও আগামী ফেব্রুয়ারিতে আব্দুস সোবাহান গোলাপকে তার নিজ এলাকায় গণসংবর্ধনা প্রদান করা হবে। ওই অনুষ্ঠানে নৌমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে একটি দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এসব কারণে আগামীতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।


বিডি প্রতিদিন/১৮ জানুয়ারি ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর