১৮ জানুয়ারি, ২০১৭ ১৪:৫১

আলু পরিচর্যায় ব্যস্ত শরীয়তপুরের কৃষকরা

রোকনুজ্জামান পারভেজ, শরীয়তপুর:

আলু পরিচর্যায় ব্যস্ত শরীয়তপুরের কৃষকরা

আলুর পরিচর্যায় ব্যস্ত  সময় পার করছেন শরীয়তপুরের হাজারো কৃষক। এ বছর জেলার তিন হাজার ২৯০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ করা হয়েছে। শীতে এবার আলুর বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।  

সরেজমিনে দেখা গেছে, খেতে কাজ করছেন চাষিরা। কেউ সেচ দিচ্ছেন, কেউ টপ ড্রেসিং (আলু গাছের সারিতে মাটি তুলে দেয়া ও সরিয়ে দেয়ার কাজ) করছেন। আবার কেউ দিচ্ছেন রাসায়নিক সার। কেউ বা ছত্রাক, রোগ-বালাই ও ঘন কুয়াশার হাত থেকে ফসল বাঁচাতে কীটনাশক স্প্রে করছেন।  

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর আলু রোপণ করার পরে শীত কম পড়ায় ও কুয়াশা থাকায় আলু গাছের ফলন দেখা যাচ্ছিলো না। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ যাবত প্রচন্ড শীত পড়ায় আলুর বাম্পার ফলন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
জেলায় ১৫ অগ্রহায়ণ থেকে  আলু বীজ রোপণ করেন কৃষকরা। এ আলু তোলা হবে ফাল্গুন মাসের শেষ দিকে। সরকার বা কোনো কোম্পানি যদি এ অঞ্চল থেকে আলু ক্রয় করে তবে আলু চাষ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ মৌসুমে আলুর লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল এক হাজার ৮৭০ হেক্টর। কিন্তু এ বছর তিন হাজার ২৯০ হেক্টর জমিতে আলুচাষ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক হাজার ৪২০ হেক্টর বেশি। 

ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর ইউনিয়নের ছাতিয়ানি গ্রামের আলুচাষি জুলহাস সরদার বলেন, আমি এ বছর ৪৮০ শতাংশ জমিতে আলু চাষ করেছি। শীত থাকলে আলুর উৎপাদন ভালো হবে আশা করছি।

একই গ্রামের আরেক কৃষক খলিল সরদার বলেন, গত বছর আলু চাষ করে অনেক লাভবান হয়েছিলাম। গত বছর আমাদের প্রতি দুই শতাংশে আলু হয়েছে ৯ মণ। তাই এ বছর আমি বেশি জমিতে আলু চাষ করেছি। তবে শীত থাকলে গত বছরের মত আলু হবে। আমরা আলুতে লাভবান হব।

জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি এলাকার আলমগীর হাওলাদার বলেন, এ বছর আমি এক কানি (৮০ শতাংশ) জমিতে আলু চাষ করেছি। আলুর পরিচর্যা করছি। আশা আছে আলু ভালো হবে। যদি আবহাওয়া ভালো থাকে তাহলে খরচ পুষিয়ে লাভ গুণতে পারবো।  

শরীয়তপুর সদর উপজেলার চরলক্ষী নারায়ণের আদর্শ কৃষক মৌলভী আবদুল হামিদ বলেন, জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে আলু চাষ বেড়েই চলছে। তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে আমরা আলু সংরক্ষণ করতে পারি না। পাশের জেলার হিমাগারে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা অতিরিক্ত খরচ বহন করে আলু রাখতে হয়। এজন্য আমরা আলু চাষ করে লাভের মুখ দেখতে পাই না। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. কবির হোসেন জানান, জেলায় এ বছর তিন হাজার ২৯০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ করা হয়েছে। উৎপাদন মৌসুমে কৃষক নিজেদের যতটুকু প্রয়োজন তা সংরক্ষণ করতে পারবে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে এ বছরও আলুর বাম্পার ফলন হবে।

তিনি আরো বলেন, মাটি ও জলবায়ু অনুকূলে থাকায় প্রতি বছরই এ অঞ্চলে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে। এ বছর অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে লক্ষ্যমাত্রার বেশি আলুর আবাদ ও বাম্পার ফলন হয়েছে। আলু চাষিদের লাভের মুখ দেখাতে জরুরি ভিত্তিতে শরীয়তপুরে একাধিক হিমাগার স্থাপন করা দরকার।


বিডি প্রতিদিন/১৮ জানুয়ারি ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর