২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ১৮:২২

মাগুরায় খুনের মামলার বাদীকে হত্যার চেষ্টার

মাগুরা প্রতিনিধি:


মাগুরায় খুনের মামলার বাদীকে হত্যার চেষ্টার

মাগুরায় চাঞ্চল্যকর পরকীয়ার জের ধরে আরজ আলী খুন মামলার বাদী মেরিনা বেগমকে (৩৫) অপহরণের পর হত্যার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় খুনী চক্রের হাত থেকে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে গ্রামবাসীর সহায়তায় প্রাণে বেঁচে গেছেন মেরিনা বেগম। গলায় ফাঁসের দাগসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের দাগ নিয়ে মেরিনা বেগম মঙ্গলবার গভীর রাতে মধুখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। বুধবার দুপুর পর্যন্ত তিনি স্বাভাবিক জ্ঞান ফিরে পাননি।

মেরিনা বেগমের কলেজ পড়ুয়া ছেলে সুমন অভিযোগ করেন, ২০১৫ সালের ২৩ জুলাই রাতে শ্রীপুর উপজেলার রায়নগর গ্রামের বাড়িতে মামা আরজ আলীর স্ত্রী রোজিনা বেগমের পরকীয়া সম্পর্কের জের ধরে জনৈক বেল্লাল, মন্টু, সাইফুলসহ অন্যান্যদের সহায়তায় তার মামী রোজিনা বেগম শ্বাসরোধ করে স্বামী আরজ আলীকে খুন করে। পরদিন সকালেই পুলিশ রোজিনা বেগমকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় নিহত আরজ আলীর বোন মেরিনা বেগম বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার অন্যতম আসামী রোজিনা বেগম ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে মেরিনা বেগমকে মামলাটি নিষ্পত্তির কথা বলে। অন্যথায় বাদিকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দিতে থাকে। বাধ্য হয়ে মেরিনা বেগম জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বেল্লাল লস্কর, মন্টু শেখ, টিক্কা বিশ্বাস ও পান্নু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় জি ডি (নং-১২৪৪ তাং-৩০/১১/১৬) করেন।

গত মঙ্গলবার দুপুরে মেরিনা বেগম জরুরি প্রয়োজনে মাগুরা শহরে যান। এ সময় বেল্লাল লস্কর ও টিক্কা বিশ্বাসসহ অন্যান্যরা কৌশলে মেরিনা বেগমকে অচেতন করে অপহরণের পর অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার সত্যপুর গ্রামে নিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে মেরিনা বেগমকে হত্যার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে পালিয়ে বাঁচতে সেখান থেকে দৌড় দেন। এবং অন্ধকারে এক শ্যালো মেশিনের গর্তে পড়ে যান মেরিনা বেগম। এ সময় তার চিৎকারে পাশের বাড়ির তারেক মিয়া ও রিনা দম্পতি মেরিনা বেগমকে গর্ত থেকে উদ্ধার করেন। গ্রামবাসী পুলিশ ও স্বজনদের খবর দিলে রাতেই মেরিনা বেগমকে মাগুরায় আনা হয়। তবে নিরাপত্তার কারণে মেরিনা বেগমকে মাগুরা থেকে সরিয়ে মধুখালী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাঝে মধ্যে বেল্লাল ও টিক্কা মেরেছে, গলায় ফাঁস দিয়েছে বলে অসংলগ্ন কথা বলছেন মেরিনা বেগম।

মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় মেরিনাকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেন, মেরিনা বেগমের চিকিৎসা চলছে। তিনি পরিপুর্ণ জ্ঞান ফিরে পেলে বিস্তারিত জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
                                                                      


বিডি-প্রতিদিন/২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর