২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ১৮:২৬

পিছিয়ে নেই সমুদ্র উপকূলীয় কলাপাড়ার নারীরা

উত্তম কুমার হাওলাদার, কলাপাড়া (পটুয়াখালী):

পিছিয়ে নেই সমুদ্র উপকূলীয় কলাপাড়ার নারীরা

পিছিয়ে নেই সমুদ্র উপকূলীয় পটুয়াখালীর কলাপাড়ার নারীরা। উপজেলার চরাঞ্চলের নারীরা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়েছেন। শিখেছেন অক্ষরজ্ঞান। জানেন মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশুস্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রাথমিক করনীয় কী। নিজেদের দক্ষতা ভিত্তিক কর্মসংস্থানও খুজে নিয়েছেন। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে সম্মিলিতভাবে সু-সংগঠিত হয়ে গড়েছেন সঞ্চয়ী সমিতি। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এফএইচ এসোসিয়েশন এর সার্বিক সহায়তায় সিডর পরবর্তী এসব পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী নিয়ে যাত্রা শুরু হয়। 

আজ সোমবার সকালে উপজেলার ধুলাসার সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউপি চেয়ারম্যান কেএম খালেকুজ্জামান। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন এফইচএর বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কাজল সেন গুপ্ত। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর বেল্লাল হোসেন, প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মিজানুর রহমান, স্থানীয় কো-অর্ডিনেটর গৌতম চন্দ্র দাস, স্থানীয় সূধী আব্দুল জলিল আকন, ডা: মো: বশার, সোলায়মান হোসেন দুলাল, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। সাধারন সভায় ৫৬ টি ক্ষুদ্রদলের ৯৫০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। যার মধ্যে ৮৭৫ জন নারী।

নারীদের সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির সূত্রে জানান, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এফএইচ এসোসিয়েশন এর সার্বিক সহায়তায় সিডর পরবর্তী এসব পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী নিয়ে যাত্রা শুরু হয়। নারী-পুরুষ আলাদা আলাদা করে ১৫-২৫ জনকে নিয়ে যাত্রা করেন। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ৯৫০ জন। যার মধ্যে নারী দল ৪৯ টি। এদের মধ্যে নেতৃত্ব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দিয়েছেন ১০২ জন। হিসাব ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষিত ১১৫ জন। স্বাস্থ্য নেতা প্রশিক্ষন দিয়েছেন ৪৯ জন। ২০০ মা নেতা স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশিক্ষন পেয়েছেন। সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়েছেন ৪২ নারী। গাভী পালন করছেন ৩৩জন। এমন অসংখ্য প্রশিক্ষণ পেয়ে এসব নারীরা এখন জীবিকায় আলোর পথ দেখছেন। এ সমিতির এখন পুজির পরিমাণ ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ৮০৬ টাকা। যার মধ্যে নিজেদের শেয়ার-সঞ্চয় পাঁচ লাখ ২০ হাজার আটশ’ টাকা। যৌথ বিনিয়োগ করেছেন ২৮ লক্ষাধিক টাকা। আর একক বিনিয়োগ প্রায় ৩৩ লাখ টাকা। ২০১৬ সালের লভ্যাংশ প্রায় দশ লাখ টাকা হয়েছে। সমিতির জন্য সাত শতক জমি কিনে সেখানে ঘর করেছেন বলে ওই সমিতির ক্যাশিয়ার ওমর ফারুক জানিয়েছেন।

দূর্যোগ বিষয়ক সক্ষম নারী উম্মে হাফসা রীপা জানান, ৪৯ সদস্যকে সাতাঁর শিখিয়েছেন। এসব নারীদের সফলতার কথা প্রত্যেকের কাছে গল্পের মতো মনে হয়েছে। যেন এগিয়ে যাচ্ছে পেছনে থাকা অজোপাড়া গাঁয়ের নারীরা। আর তাদের পেছনে রাখার সুযোগ নেই। অদম্য এসব মায়েরা আজ যেন প্রাপ্তির সঙ্গে প্রত্যাশার মিল খুঁজে পেয়েছেন। শুধু এখানেই থেমে নেই বাল্যবিয়ে বিরোধী নাটিকাও মঞ্চয়ান করে এসব নারী-পুরুষ।

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর