২৩ মার্চ, ২০১৭ ১৪:০৪

নওগাঁ-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়কে সবজি চাষ!

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

নওগাঁ-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়কে সবজি চাষ!

নওগাঁর রাণীনগরের ওপর দিয়ে যাওয়া নওগাঁ-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়কের নির্মাণ কাজ দীর্ঘ ১১ বছরেও শেষ হয়নি। এর ফলে অধিকাংশ জায়গা বেদখল হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও সড়কের উপর কুঠরি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। আবার কোথাও ধান শুকানোর কাজ চলছে। মহাসড়কের উপর কলাবাগান করা হয়েছে, সবজি চাষও চলছে। 

সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে একদিকে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগে যেমন দূরত্ব কমবে অন্যদিকে কৃষিপণ্য সরবরাহ ও ব্যাণিজ্যিক সম্প্রসারণ হবে।

নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের সূত্র মতে, নওগাঁ-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়কের জন্য ২০০৫ সালে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ৯৮ কোটি টাকার প্রকল্প উন্নয়ন প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুমোদন দেয়। পরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সীমিত আকারে ৫০ কোটি টাকার অনুমোদন দেয়। ওই বছরের ২৮ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাটোরের নলডাঙ্গায় সড়কের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। এরপর ২০০৭ সালের জুন পর্যন্ত নওগাঁ-সান্তাহার ঢাকা রোড মোড় থেকে রাণীনগর-নাটোরের নলডাঙ্গা পর্যন্ত সাড়ে ৪৮ কিলোমিটার রাস্তার মাটি ভরাটের কাজ শেষ হয়। মহাসড়কের নওগাঁ অংশের ২৬ কিলোমিটারের মধ্যে সাড়ে সাত কিলোমিটার রাস্তা পাকা হয়। আর নাটোর অংশের সাড়ে ২২ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ১৬ কিলোমিটার রাস্তা পাকা হয়। 

নতুন করে অর্থায়ন না হওয়ায় মোট ২৩ কিলোমিটার রাস্তা পাকা হওয়ার পর হাইড্রোলজি সমীক্ষার নামে বন্ধ হয়ে যায় সড়কটির নির্মাণ কাজ।সড়কটি পাকা না হওয়ায় বাকি সাড়ে ২৫ কিলোমিটার রাস্তা এখন এলাকাবাসীর গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। রাস্তার উপরে কলা বাগান, সবজি চাষসহ ছোট ছোট বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছে এলাকাবাসী। 

শুধু সান্তাহারের ঢাকা রোড থেকে রাণীনগর রেলস্টেশন পর্যন্ত পাকাকরণের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। রাণীনগর-নলডাঙ্গা পর্যন্ত রাস্তার মাটি ভরাটসহ অন্য কোনো কাজ শেষ না হওয়ায় নাটোর-নওগাঁ-সান্তাহার হয়ে বগুড়া যাওয়ার জন্যে রাস্তাটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ফলে এলাকার কৃষক, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ জনগণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। 

রাণীনগরের বাসিন্দা ওহিদুল ইসলাম মিলন, বাসার, চঞ্চল, উজ্জল হোসেন ও সেজাউদ্দীনসহ বেশ কয়েকজন জানান, নির্মাণ কাজ শেষ হলে কৃষিপণ্য সরবরাহ ও ব্যবসার ক্ষেত্রে ব্যাপক সুবিধা পাওয়া যাবে। আর সেই সঙ্গে ঢাকার দূরত্ব কমবে প্রায় ৬০ কিলোমিটার। 

এ বিষয়ে (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এই আঞ্চলিক মহাসড়কটি বাস্তবায়নের জন্য গত সাত বছরে সংসদে ১১ বার দাবি উত্থাপন করেছি। প্রকল্পটি বাবস্তবায়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছেন তাদের সকলের আন্তরিক সহযোগিতা পেয়েছি। আশা করছি, এই প্রকল্পটির কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এলাকাবাসী দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবে। 

নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হামিদুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সময়ের ব্যবধানে এই প্রকল্পটির ব্যয় বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। আর এজন্য নতুন প্রস্তাবনা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এটি দ্রুত পাশ হবে বলে আশা করছি। 


বিডি প্রতিদিন/২৩ মার্চ, ২০১৭/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর