২৫ এপ্রিল, ২০১৭ ১১:০৬

ঠাকুরগাঁওয়ে নষ্ট হয়ে গেছে লাখ লাখ টাকার কাঁচা ইট

আব্দুল লতিফ লিটু, ঠাকুরগাঁও:

ঠাকুরগাঁওয়ে নষ্ট হয়ে গেছে লাখ লাখ টাকার কাঁচা ইট

অসময়ে বৃষ্টির কারণে ঠাকুরগাঁওয়ে তৈরি করা লাখ লাখ টাকার কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে ইটভাটা মালিকরা চলতি বছরে চরম লোকসানে পড়েছে। অন্যদিকে ইটের অভাবে প্রায় ৫০ কোটি টাকার সরকারি ভবন নির্মাণের কাজ করা সম্ভব না বলে জানান ইটভাটা মালিক সমিতি।

দৈনিক চাহিদা পুরনে ঠাকুরগাঁও জেলার মৌসুমি ইটভাটা মালিকরা বরাবরের মতো এবারো শ্রমিকদের দিন হাজিরা দিয়ে হাজার হাজার কাচাঁ ইট তৈরি করে ফেলে রাখে। আর সেই কাচাঁ ইটগুলো তাদের সময়মত পুড়িয়ে চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি করে থাকে। কিন্তু এবছর অসময়ে বৃষ্টি ভাটা মালিকদের লোকসানের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রস্তুতি নেয়ার আগেই জেলার পীরগঞ্জ, হরিপুর, রাণীশংকৈল, বালিয়াডাঙ্গী ও সদরসহ ৫টি উপজেলার ইটভাটায় তৈরি করা হাজার হাজার ইট বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। অসময়ে ঘণ ঘণ বৃষ্টিপাত হওয়ায় লোকসানের বোঝা ভাড়ি হয়ে যাওয়ায় অনেক ইট ভাটার মালিক ভাটা বন্ধ করে দিয়েছে। এ কারণে ইতোমধ্যে জেলার ৫টি উপজেলায় বেকার হয়ে পরেছে জেলার শত শত শ্রমিক। বৃষ্টি না হলে স্থানীয় এসব শ্রমিকরা আরো দুই মাস ইটভাটায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করলেও বর্তমানে অনেক শ্রমিক কাজের সন্ধানে ঘুরে ফিরছে। আবার কিছু ইটভাটা মালিক তাদের লোকসান কাঁটিয়ে উঠতে পুনরায় ভাটা চালু করলেও বৃষ্টি যেনো তাদের পিছু ছাড়ছেই না। এতে চরম ক্ষতির মুখে পরছে তারা। আর এ অবস্থায় ভাটা মালিকরা চলতি মৌসুমে কাঙ্খিত ইট পুড়াতে না পারায় জেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানরা প্রায় ৫০ কোটি টাকার কাজ (সরকারি ভবন) নির্মাণ করতে পারবেন না বলে আশংঙ্কা করা হচ্ছে।  
অন্যদিকে গেল বছরের তুলনায় এবছর শ্রমিক মুজুরি, মাটি, গাড়ি ভাড়া, ভ্যাট, ট্যাক্সসহ সব ধরনের জিনিস পত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে কয়েকগুন। তবে আগামীতে আকাশ ভাল থাকলে লোকসান কিছুটা কিটিয়ে উঠা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন ইট ভাটার সাথে জড়িতরা।  
সদর উপজেলার আকঁচা, সালন্দর, গড়েয়া ও জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ইটভাটা শ্রমিক রফিকুল ইসলাম, রশিদুল, জামাল উদ্দিনসহ অনেকে জানান, বৃষ্টির কারণে ভাটা মালিকরা ইট তৈরি করতে না পারায় আমরা সবচেয়ে কষ্টে আছি। আমরা অন্তত্য আরো দুই মাস ইট ভাটায় কাজ করে খেতে পারতাম। এখন কাজের অভাবে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে হচ্ছে কোন দিন কাজ পাই আবার কোন দিন ফিরে আসতে হয়। মালিকদের কাছে অনেক শ্রমিক আগাম টাকা নিয়ে মাথায় বোঝা করে রেখেছে। এখন করুন অবস্থায় দিন পার করছি আমরা।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কেয়া ব্রিকসের ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম ও সদর উপজেলার খোচাবাড়ি এলাকার এইচ বি ব্রিকসের ব্যবস্থাপক হেচাবউদ্দিন হেচা জানান, বৃষ্টির কারণে আমাদের তৈরি করা কয়েক লাখ কাচাঁ ইট নষ্ট হয়ে গেছে। ৪ থেকে ৫ দফায় বৃষ্টি হওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে ইটভাটা মালিকরা। আমরা আয় করবো তার পরে ভ্যাট ট্যাক্স পরিশোধ করবো। এখনতো আমরা চরম লোকসানে পরে আছি। আমরা আশা করছি সরকার আমাদের বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের উপ-পরিচালক এ কে এম মাউদুদুল ইসলাম জানান, গত রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও জেলায় ৩১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর