২৬ এপ্রিল, ২০১৭ ১৪:৪২

গবাদি পশু পালনে স্বাবলম্বী পার্বতীপুরের অনেক পরিবার

দিনাজপুর প্রতিনিধি

গবাদি পশু পালনে স্বাবলম্বী পার্বতীপুরের অনেক পরিবার

জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে আবাদী জমি নষ্ট করে বসতবাড়ি নির্মাণ করায় পার্বতীপুর উপজেলায় কৃষিখাতে কর্মসংস্থান কমায় আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির প্রসারের সাথে সাথে স্বল্প আয়ের মানুষের গবাদিপশু ও হাস-মুরগি পালন ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অনেক বেকার যুবক গবাদি পশু পালনে নিজেদের নিয়োজিত করে স্বচ্ছল জীবন-যাপনের পথ খুঁজে পেয়েছেন। 

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কৃষি নির্ভর পার্বতীপুর উপজেলায় বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে শতাধিক দুগ্ধ খামার, ২৪টি ছাগলের খামার, ২৬টি ভেড়া খামার, ১২২টি মুরগির খামার, ৪৮টি হাসের খামার ও একটি বড় আকৃতির কোয়েল খামার গড়ে উঠেছে। এছাড়া পারিবারিক পর্যায়ে দুটি-তিনটি গরু নিয়ে অসংখ্য ছোট-খাটো দুগ্ধ খামার প্রায় প্রতিটি গ্রামে ও প্রতিটি পরিবারে দেখতে পাওয়া যায়। এখান থেকে প্রতিদিন গরু, ছাগল, হাস-মুরগি, দুধ, ডিম ট্রাক ও বাসে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য জেলায় রপ্তানি হচ্ছে। 
গত বছর কোরবানীর ঈদে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৪৮ হাজার গরু-ছাগল, ভেড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করেন গবাদিপশু ব্যবসায়ীরা। 

স্থানীয় সেলিম মন্ডল জানান, তার খামারে দেড় হাজার হাস পালন করে তিনি স্বাবলম্বী হয়েছেন। 
 
উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের দাড়ারপাড় গ্রামের বিত্তহীন সাইফুল ইসলাম (৪০) গত ৪ বছর ধরে হাঁস পালন করে আর্থিক উন্নতি করেছেন। তিনি প্রতি বছর এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে গাইবান্ধার বামনডাঙ্গা থেকে দেড় থেকে দুই হাজার একদিন বয়সের হাসেঁর বাচ্চা কিনে নিয়ে আসেন। তিন মাসে খাবারের উপযোগী হলে সেগুলো বিক্রি করে দেন। এতে খরচ বাদে প্রতি বছর তার প্রায় এক থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ হয়।
 
শহরের রোস্তম নগর মহল্লার আসমাউল হুসনা বলেন, তার ২০টি উন্নতজাতের ছাগল রয়েছে। ছাগল পালনের মাধ্যমে তার সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে।  

এভাবে পলাশবাড়ী ইউপির মধ্যপাড়া ভোটখাট এলাকার সাকিউল আলম বিপুল গরুর খামার করে আজ স্বাবলম্বী হয়েছেন। 

এদিকে, এবছর পার্বতীপুর উজেলায় ১৬০ জন কৃষক প্রায় ১০০ একর জমিতে নেপিয়ার ঘাস চাষ করেছেন। উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের উত্তর আটরাই গ্রামের আ. সামাদ আলী (৪০) ১ একর ২০ শতক জমিতে ঘাস চাষ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন ও ঘুচিয়েছেন বেকারত্ব। ফিরে এসেছে পরিবারে স্বচ্ছলতা। এখন ঘুম থেকে উঠেই দেখা যায় শহর ও গ্রামের রাস্তার মোড়ে, হাট বাজারে পিক-আপ বা রিক্সা-ভ্যান করে ঘাস বিক্রি হচ্ছে।

প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইদ্রিস আলী বলেন, এক সময় পার্বতীপুরে একটি দেশি গাভী থেকে প্রতিদিন মাত্র ২ লিটার দুধ পাওয়া যেত। কিন্তু দেশি গাভীকে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে উন্নতজাতের গাভী সহজলভ্য হওয়ায় বর্তমানে একেকটি গাভী থেকে দিনে প্রায় ২৫-৩০ লিটার দুধ পাওয়া যাচ্ছে। দুধ, ডিম ও মাংসের দাম বেশ চড়া হওয়ায় হাস-মুরগি গবাদিপশু পালন লাভজনক পেশায় পরিণত হয়েছে। 


বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর