২৬ এপ্রিল, ২০১৭ ১৪:৫০

এলাকায় মন্ত্রী না যাওয়ায় হাওরবাসীর মানববন্ধন

নেত্রকোনা প্রতিনিধি:

এলাকায় মন্ত্রী না যাওয়ায় হাওরবাসীর মানববন্ধন

নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছে খালিয়াজুরী উপজেলাবাসী। বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টায় হাওড়দ্বীপ খালিয়াজুরি উপজেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণাসহ কৃষক ও মৎস্যজীবীদের পুনর্বাসনের দাবীতে এ মানববন্ধন করা হয়। জেলা শহরে বসবাসরত খালিয়াজুরি উপজেলাবাসী ‘হাওড় বাচাও, খালিয়াজুরি বাঁচাও’ স্লোগানকে সামনে রেখে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। 

ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালে বিক্ষোভকারীরা দুর্গত এলাকায় মন্ত্রীর পরিদর্শন না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মানববন্ধনে দুর্গত মানুষদের পক্ষ থেকে ১১ দফা দাবি ঘোষণা করা হয়। 

খালিয়াজুরী বাজারের ব্যবসায়ী সাধন দাস ক্ষোভের সাথে বলেন, আমাদের এলাকার এমপি রেবেকা মমিনের খালিয়াজুরীর প্রতি কেন এমন বিরূপ আচরণ জানতে চাই। মন্ত্রী মহোদয়কে আমাদের দুর্গত এলাকা না দেখিয়ে কম ক্ষতিগ্রস্থ জায়গা দেখিয়ে দেয়া হয়েছে। আমরা কি আওয়ামীলীগে ভোট দেই নাই? এই মানববন্ধন এখন করতাম না। আমরা ক্ষোভে দুঃখে এ মানববন্ধন করেছি। মন্ত্রী মহোদয় নিজ চোখে আমাদের অবস্থা দেখে গেলে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলতে পারতেন। আজ উনাকে দেখানো হয় নি। 

খালিয়াজুরী উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা স্বাগত সরকার শুভ বলেন, ১০০ ভাগ ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা আমাদের খালিয়াজুরী উপজেলা। কিন্তু সেখানের খবর না নিয়ে সরেজমিন না দেখে আমাদের মন্ত্রী মহোদেয় দেখে গেছেন মাত্র ১০ ভাগ ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা বারহাট্টা। আমরা খালিয়াজুরীবাসী কি এই সরকারের জন্য কোন অবদান রাখি নাই ? 

খালিয়াজুরী উপজেলা চেয়ারম্যান শামছুজ্জামান সিদ্দিকী শোয়েব বলেন, উপজেলার ২৬ হাজার কৃষক সবাই আজ ক্ষতিগ্রস্থ। আমি নিজে চেয়ারমেন হয়েও লাইনে দাড়িয়ে ৫ কেজি চাল কিনেছি। ছোট বড় কোন কৃষকের ঘরেই আজ চাল নেই। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি করছি প্রতিটি ঘরে ঘরে যেন চাল পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কৃষক বাঁচলে দেশ বাচঁবে। এই হাওর এলাকার ধান শুধু হাওরবাসী খায় না। এগুলো সারাদেশে যায়। 

১১ দফা দাবিসমূহের মধ্যে রয়েছে, দুর্গতদের মাঝে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, ভিজিএফ, ভিজিডি প্রভৃতি বরাদ্দ বৃদ্ধি, আগামী এপ্রিল মাস পর্যন্ত ওয়ার্ড পর্যায়ে ওএমএস’র মাধ্যমে ১০টাকা কেজি দরে চাল ও আটা বিক্রি, ব্যাংকের কৃষি ঋণ ও এনজিওর ক্ষুদ্র ঋণ মওকুপ এবং আগামী ফসলের জন্য বিনাসুদে ঋণ বিতরণ, পরবর্তী ফসলের জন্য বিনামূল্যে সার, বীজ ও কীটনাশক প্রদান, গবাদিপশুর জন্য বিনামূল্যে দানাদার খাদ্য বিতরণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন মওকুপ ও শতভাগ শিক্ষার্থীর জন্য উপবৃত্তি চালু, হাওড়-বিল-খাল-নদীতে মৎস্যজীবীদের উন্মুক্তভাবে মাছ ধরার অধিকার নিশ্চিত করা, বাজার-ঘাটের টোল-ফি কমানো, ধনু নদীর উৎস হতে মেঘনার মোহনা পর্যন্ত স্থায়ী বাঁধ কাম রাস্তা নির্মাণ, উপজেলার সব নদী-খাল-বিল খনন ও দখল মুক্ত করণ এবং বাঁধ রক্ষায় ব্যর্থ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের অপসারণ ও শাস্তি প্রদান। পরে জেলা প্রশাসক ড. মুশফিকুর রহমানের নিকট এসকল দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। 


বিডি প্রতিদিন/২৬ এপ্রিল ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর