টেকনাফের সাবরাং খালের বাধঁ তলিয়ে গেছে নাফ নদীর জোয়ারের ঢলে। লবণ ক্ষেত ডুবে স্বপ্ন ভেঙেছে শত শত লবণ চাষীর। গত কয়েক বছর ধরে এ অবস্থা সাবরাং-টেকনাফের প্রায় ২ হাজার একর লবণ মাঠে। এখানে হচেছ না আমন চাষও। ৫-৬ বছর আগেও এখানে ছিল কৃষক ও লবণ চাষীদের মুখে হাসির ঝিলিক। এখন শুধুই কষ্ট। লবণ মাঠে কাজ করতে না পেরে হতাশ মনে দিন কাঠাছেন লবণ চাষী আব্দুল করিম, ছৈয়দ আমিননের মত শত শত দিন মজুর।
গতকাল বুধবার বিকেলে সাবরাং ৩ নং স্লুইস গেইট গিয়ে দেখা গেছে, বেড়িবাধঁ তলিয়ে গেছে নাফ নদীর জোয়ারের ঢলে। অভিযোগ রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গাফিলতি আর বাঁধ নির্মাণকারী ঠিকাদারদের দুর্নীতি-ব্যর্থতার কারণেই কৃষক পরিবার পথে বসেছে শত শত কৃষক পরিবারকে। ঠিকাদার বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতের দায়িত্ব পেয়ে তা সময়মতো ও সঠিকভাবে শেষ করেননি। ফলে লবণ ও ফসল রক্ষা বাঁধগুলো ভেঙে বিপর্যয় ঘটে চলেছে।
এ ব্যাপারে পাউবোর কক্সবাজার বিভাগের নিবার্হী প্রকোশলী মোঃ সাবিবুর রহমান বলেন, ‘ কাজ এখনো চলমান রয়েছে। যেহেতু কাজ বুঝিয়ে নেওয়া হযনি তাই ঠিকাদারকে বাধ নিমার্ণ কাজ শেষ করে দিতে বলা হয়েছে। তিনি এখানে কোনো কর্মকর্তার গাফিলতি বা দুর্নীতি ছিল না বলেও দাবী করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নাফ নদের সাবরাং খাল ৩ নং স্লুইস গেইট বাধঁ প্রাথমিক ভাবে প্রায় ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজস্ব খাতের টাকায় নিমার্নের টেন্ডার দেয়। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ করার শর্তে মেসাস ইরাস এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ নিয়েছিল। মূল ঠিকাদার কাজ না করে উপ-ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় রুহুল কাদের মানিক নামের আরেক ঠিকাদারকে। তারা নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি। যতটুকু হয়েছে, তাও নিম্নমানের বলে অভিযোগ উঠেছে।
তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি রুহুল কাদের মানিককে বার বার মোবাইল ফোনে যোগযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
সাবরাং ইউপি চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, সাবরাং এর দুঃখ এ খাল। এটি যথাসময়ে টিকাদার কাজ শেষ না করার এ দুর্গতি । তিনি দ্রুত সংশ্লিষ্ঠদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।
কক্সবাজার জেলা পরিষদের সদস্য, সাবেক টেকনাফ উপজেলা চেযারম্যান মোঃ শফিক মিয়া বলেন, যথাসময়ে কাজ না করার এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আজ বাধঁ ভেঙ্গে প্রায় ২ হাজার একর লবণ জমি ও ৫ ’শ একর ধান চাষের জমি অনাবাধী হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় লবণ চাষী, দিন মজুর ও কৃষকদের জীবন যাপন দারুণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের অবহেলা ও ঠিকাদারের দুর্নীতির কারণে হাজার হাজার একর জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
পাউবো কক্সবাজার অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, বাধেঁর নিচের বল্লি ও বালির বস্তা দেওয়ার পর কাজ পুরো সমাপ্ত হয়নি। এ সময় জোয়ারের পানি বাধঁ টপকে চাষযোগ্য জমিতে ঢুকে। এক পর্যায়ে বাধেঁর একটি অংশে ভাঙ্গন ধরে।
বিডি প্রতিদিন/২৭ এপ্রিল, ২০১৭/ ই জাহান