২৮ এপ্রিল, ২০১৭ ১৮:৩৩

বগুড়ায় গ্রাহকের কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে এনজিও উধাও

নিজস্ব প্রতিবেদক,বগুড়া

বগুড়ায় গ্রাহকের কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে এনজিও উধাও

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় গ্রাহকের কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে জনতা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামের একটি এনজিও উধাও হয়েছে। সংস্থাটির ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হয়েছেন প্রায় দুই হাজার গ্রাহক। 

অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে এসব গ্রাহকের নিকট থেকে অন্তত ২০কোটি ১০লাখ টাকা আমানত সংগ্রহ করেন সংস্থাটি। পরে উক্ত পরিমান টাকা নিয়ে এনজিও’র চেয়ারম্যানসহ এক মাঠকর্মী পালিয়ে গেছে। এদিকে চক্রটির প্রতারণার শিকার হয়ে উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের হুসনাবাদ গ্রামের আলতাব হোসেন বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। 

মামলায় সংস্থাটির চেয়ারম্যান কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা সদরের খন্দকার  আবুল কালাম আজাদ (৫০) ও মাঠকর্মী রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার চকমোহাব্বদপুর গ্রামের আফজাল হোসেনকে (৪০) অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে  শুক্রবার  বিকেল পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
 
জানা যায়, পৌরশহরের খেজুরতলাস্থ ফিরোজ আলীর চারতলা ভবনের তৃতীয়তলা ভাড়া নিয়ে জনতা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামের ওই এনজিও কার্যক্রম শুরু করেন। ২০১২ সালে বগুড়া সমবায় কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সংস্থাটি নিবন্ধন নেন।  সংস্থার কার্যক্রমের মধ্যে ছিল লোন প্রদান, সঞ্চয় ও শেয়ার আদায় এবং আমানত সংগ্রহ করা। নিবন্ধন পাওয়ার পর থেকে শেরপুর, ধুনট, রায়গঞ্জ, নন্দীগ্রাম, শাজাহানপুরসহ আশপাশের এলাকার প্রায় দুই হাজার সদস্য সংগ্রহ করেন। তাদের অধিক লভ্যাংশের লোভ দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে প্রতিদিন টাকা আদায় করতো। 

চলতি মাসের ২ তারিখে বিভিন্ন মেয়াদি আমানতের লভ্যাংশ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাঝে বিনিয়োগের টাকা দেয়ার কথা ছিল। সে মোতাবেক সুবিধাভোগী সংস্থার কার্যালয়ে যথাসময়ে উপস্থিতও হন। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখতে পান উল্টো চিত্র। কার্যালয় তালাবদ্ধ। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কেউ নেই। খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন রাতের আঁধারে সংস্থাটির চেয়ারম্যানসহ কর্মকর্তারা পালিয়ে গেছেন।

মামলার বাদি আলতাব হোসেন জানান, এক লাখ টাকার প্রতিমাসে ১২হাজার টাকা লভ্যাংশ দেয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ১০লাখ টাকা নিয়েছেন। পাঁচ বছর মেয়াদি আমানত হিসেবে উক্ত টাকা রেখেছেন। টাকা দেয়ার সব কাগজপত্রও তার কাছে রয়েছে। গেল চার মাসে সংস্থাটির পক্ষ থেকে লভ্যাংশের মোট ৪৮হাজার টাকাও পেয়েছেন। কিন্তু গেল ২এপ্রিল মাসের লভ্যাংশ নেয়ার জন্য সংস্থার কার্যালয়ে গিয়ে তালাবদ্ধ দেখতে পান। কর্মকর্তা-কর্মচারী কেউ নেই। টাকা পয়সা নিয়ে সবাই পালিয়ে গেছে। 

তিনি আরও বলেন, একইভাবে তার এলাকার সরোয়ার হোসেন সদস্য নং-১০৫, বেলাল হোসেন সদস্য নং-৩৯৭, হাবিবুর রহমান সদস্য নং-২৮০, ইসমাঈল হোসেন সদস্য নং-৩৮৭, শ্রী অতুল চন্দ্র সদস্য নং-৭১, নজরুল ইসলাম সদস্য নং-৫০৫, আজিজুল সেখ সদস্য নং-৪৭৯সহ বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে মামলার আসামিরা অন্তত ২০কোটি ১০লাখ টাকা আদায় করে আত্মসাত করে গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে আলতাব হোসেন অভিযোগ করেন।
 
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামছুজ্জোহা ঘটনার সত্যতা স্বীকার বলেন, এ ঘটনায় মামলা নেয়া হয়েছে। পলাতক থাকায় আসামিদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের ধরতে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। 

 

 


বিডি-প্রতিদিন/ ২৮ এপ্রিল, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত-৬

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর