শিরোনাম
২৯ এপ্রিল, ২০১৭ ১৯:৪২

পটুয়াখালীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ২৫ জলদস্যুর আত্মসমর্পণ

রাহাত খান ও সঞ্জয় কুমার দাস পটুয়াখালী থেকে:

পটুয়াখালীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ২৫ জলদস্যুর আত্মসমর্পণ

এবার পটুয়াখালীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি’র কাছে ৩১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১ হাজার ১শ’ ১০ রাউন্ড গুলি জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন সুন্দরবনের কুখ্যাত জলদস্যু ‘আলিফ ও কবিরাজ’ বাহিনী প্রধান সহ তাদের ২৫ সহযোগী। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় পটুয়াখালী শিল্পকলা একাডেমি হলে এক অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পন করেন তারা। 

এ সময় আলিফ বাহিনীর প্রধান আলীফ ওরফে দয়াল এবং কবিরাজ বাহিনীর প্রধান ইউনুস আলী মোল্লা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা সরকারের কাছে তাদের জীবন ভিক্ষা চান এবং ফের অন্ধকার জগতে ফিরে না যাওয়ার ওয়াদা করেন। একই অনুষ্ঠানে গত ৩০ মার্চ বরিশালে র‌্যাব অফিসে (স্বরাস্ট্র মন্ত্রীর কাছে) আত্মসমর্পণ করা সুন্দরবনের ছোট রাজু বাহিনীর ১৫ সদস্য ও তাদের পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ অনুদান দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এ নিয়ে গত বছরের ৩১ মে থেকে আজ শনিবার পর্যন্ত ১১ দফায় ১২ জলদস্যু বাহিনীর প্রধানসহ ১৩২ জন সদস্য ২৪৭টি অস্ত্র এবং ১২ হাজার ৪শ’ ৯০ রাউন্ড গুলি জমা দিয়ে র‌্যাব-৮’র মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। 

র‌্যাব-৮ অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আনোয়ার-উজ জামানের সভাপতিত্বে অস্ত্র সমর্পণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, র‌্যাব প্রাথমিকভাবে সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায় দস্যু বিরোধী অভিযান জোড়দার করেছে। সুন্দরবন দস্যুমুক্ত হওয়ার পর পূর্বাঞ্চলে হাতিয়া-সন্দিপ এলাকায় জোড়দার অভিযান চালাবে র‌্যাব। 

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, আগে আমাদের মাথাপিচু গড় আয় ছিলো ৬শ’ ডলার। এখন মাথাপিচু গড় আয় দাড়িয়েছে ১৫শ’ ডলারে। এমন একটি দেশে জলদস্যু-বনদস্যু থাকবে এটা মেনে নেয়া যায়না। যারা জলদস্যু-বনদস্যুদের ইন্ধন দিচ্ছে, কিংবা পেছন থেকে রসদ যোগান দিচ্ছে তাদেরও ভয়াবহ পরিনতির মুখোমুখি হতে হবে বলে হুশিয়ারী দেন তিনি। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি বলেন, কয়েক লাখ জেলে সুন্দরবন সংলগ্ন সমুদ্রে মাছ শিকার এবং লাখো বাওয়ালী সুন্দরবনে গোলপাতা সহ কাঠ সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। দস্যুরা তাদের জীবন অতিষ্ট করে তুলেছিলো। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর জোড়ালো অভিযানে দস্যুরা এখন কোনঠাসা। অনেকেই সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে। এখনও সক্রিয় কিংবা নিস্ক্রিয় যেসব দস্যু বাহিনী রয়েছে, তাদেরও আত্মসমর্পন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানান মন্ত্রী। আত্মসমর্পণ করলে তাদের সরকার পুনর্বাসন করবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি। শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন যেকোন মূল্যে দস্যুমুক্ত করার প্রতিশ্রুতি পুনব্যক্ত করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কোথাও মাদক তৈরি হয় না। আমরা ভিকটিম হচ্ছি। তাই মাদক চোরাচলান প্রতিরোধে সারা দেশে ২০০ কিলোমিটার সিমান্ত সড়ক তৈরি হচ্ছে ফেস বাই ফেস। এতে আগামীতে নজরদারী আরো বাড়ানো সম্ভব হবে।  

অনুষ্ঠানে ইতিপূর্বে আত্মসমর্পণ করা ছোট রাজু বাহিনীর ১৫ সদস্য এবং তাদের পরিবারকে আর্থিক অনুদান দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী  আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি। এ সময় পটুয়াখালীর এমপি মাহবুবুর রহমান তালুকদার, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খান মোশাররফ হোসেন, র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক লে. কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, অতিরিক্ত ডিআইজি আকরাম হোসেন, জেলা প্রশাসক একেএম শামীমুল হক সিদ্দিকী, পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান, র‌্যাব-৮’র উপ-অধিনায়ক মেজর আদনান কবির, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক আফজাল হোসেন, পৌর মেয়র ডা. শফিকুল ইসলাম ও উপজেলা চেয়ারম্যান তারিকুজ্জামান মনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর