শিরোনাম
২৫ মে, ২০১৭ ১৮:২৮

হাসপাতালে কাতরাচ্ছে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ সাকিয়া

নেত্রকোনা প্রতিনিধি:

হাসপাতালে কাতরাচ্ছে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ সাকিয়া

নেত্রকোনায় হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ সাকিয়া সুলতানা (৩০)।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেলে অভিযোগটি নেয়া হয়েছে। সেই সাথে সাকিয়াকে উন্নত চিকিৎসাও দেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে পুলিশ অভিযুক্ত জিয়াউরকে আটক করে থানা হেফাজতে নেয়। তার বিরুদ্ধে মোহনগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের হয়।
সাকিয়া ও তার স্বজন রা অমানবিক নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। নয় বছর পূর্বে মোহনগঞ্জ উপজেলার বড়তলী গ্রামের জিয়াউরের সঙ্গে একই উপজেলার পেরিরচর গ্রামের সাকিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য জিয়াউর স্ত্রীকে নির্যাতন করে আসছিল। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার গ্রাম্য শালিস করেও কোন লাভ হয় নি। গত মঙ্গলবার রাতে ফের তাকে কয়েকদফা নির্যাতন চালায়। বালিশ চাপায় হত্যার চেষ্টা এবং গলায় রশি লাগিয়েও হত্যার চেষ্টা করে। এরপর তাকে উলঙ্গ করে ছবি ধারণ করে। সেই সাথে গোপনাঙ্গে কয়েনসহ কানের দুল প্রবেশ করায়। এসকল নির্যাতনের এক পর্যায়ে সাকিয়ার চিৎকারে পাশের বাড়ি থেকে ভাসুর নুরুল হক গিয়ে গৃহবধূ সাকিয়াকে উদ্ধার করে। পরদিন বুধবার সকালে তার মা-ভাইরা উদ্ধার করে প্রথমে মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি দেখে ডাক্তার নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে রেফার্ড করে। লোমহর্ষক নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে সাকিয়া বার বার বলে উঠেন জিয়াউর থানা থেকে ছাড়া পেলেই আবার তাকে মেরে ফেলবে। তার তিন বাচ্চাকে যেন মানুষ করতে পারে সেই সময় পর্যন্ত বেচে থাকার অর্জি জানায় গৃহবধূ সাকিয়া।
জিয়াউরের বড় ভাই নূরুল হক সাকিয়াকে হাসপাতালে দেখতে এসে বলেন, তার ভাই যে অন্যায় করেছে এটি মানুষের মধ্যে পড়ে না। তাকে যে ধরনের শাস্থি দেয়া দরকার সেটাই করা হোক। বর্বোরোচিত এ ন্যাক্কার ঘটনার তিনিও নিন্দা জানান।
নেত্রকোনা সদর হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রউফ বলেন, বৃহস্পবিার দুপুরে মহিলা অধিদপ্তরের আওতায় অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়েছে। ভিক্টিমকে চিকিৎসা সেবা সহ যত ধরনের সহয়তা প্রদান প্রয়োজন তা করা হবে।    
নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ ছানোয়ার হোসেন বলেন, তিনি ভিকিটমকে দেখে এসেছেন। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত জিয়াউরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নারী শিশু আইনে একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। অপরাধ প্রমাণিত হলে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্থির আওতায় এনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যাতে এ ধরনের লোমহর্ষক ঘটনা কেউ ঘটাতে না পারে।

বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

সর্বশেষ খবর