২৭ মে, ২০১৭ ০৮:৩১

দ্বিতীয় দিনেও নাশকতার আগুনে জ্বলছে সুন্দরবন

বাগেরহাট ও শরণখোলা প্রতিনিধি :


দ্বিতীয় দিনেও নাশকতার আগুনে জ্বলছে সুন্দরবন

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী ফরেস্ট ক্যাম্পের ‘মাদ্রসার ছিলায়’ এলাকায় লাগা আগুন ধোয়ার কুণ্ডলী পাকিয়ে শুক্রবার রাতভর দাউ-দাউ করে জ্বলেছে। শনিবার সকাল সোয়া ৮টায় এই রিপোর্ট লেখ পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুনে এ পর্যন্ত প্রায় ৫ একর বনভূমির ছোট গাছপালা, লতাগুল্ম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। 

আজ দ্বিতীয় দিন শনিবার ভোর থেকে আবারও আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেছে বাগেরহাট, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিটসহ পাশাপাশি সুন্দরবন সংলগ্ন উত্তর রাজাপুর গ্রামের ২ থেকে ৩শ’ সেচ্ছাসেবী। তবে, ঘটনাস্থলের আশপাশে পানি না থাকা ও শুক্রবার রাতে গহীন অরণ্যে কাজ করা সম্ভব না হওয়ায় এখনও পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে চলা বাগেরহাট ফায়ার সাভিসের ডিএডি মাসুদ শেখ। 

তিনি আরও জানান, শুক্রবার দিবাগত রাতেও ধোয়ার কুণ্ডলী পাকিয়ে আগুন জ্বলেছে। এসব আগুন নিয়ন্ত্রণে তারা ভোর থেকেই আবারও কাজ শুরু করেছেন। 

সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা এসিএফ মেহেদীজ্জামান বলেছেন, আগুন নিভানোর কাজ এখনো চলছে। তবে, আগুন নির্দিষ্ট এলাকায় নিয়ন্ত্রণে মধ্যে রয়েছে। আজকের মধ্যেই আগুন পুরোপুরি নিভিয়ে ফেলা সম্ভব হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত শরণখোলার ধানসাগর ইউপি সদস্য মো. জাকির হোসেন খান জানান, শনিবার ভোর থেকে আবারও তারা আগুন নিয়ন্ত্রনে কাজ শুরু করেছেন। এলাকার ২ থেকে ৩শ' সেচ্ছাসেবী নিয়ে দ্বিতীয় দিনেও আগুন নেভানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। আগুন যাতে সুন্দরবনের ব্যাপক এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে জন্য অগ্নিকাণ্ডের চার পাশে ফায়ার লাইন কেটে (অগভীর নালা কেটে পানি ভরে দেওয়া) আগুন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

অন্যদিকে, আগুন লাগানোর ঘটনায় জড়িত আগুন দস্যুদের চিহিৃত করতে ৩ সদস্যের কমিটি তদন্তের কাজ শুরু করেছে। এই তদন্ত কমিটিকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা এসিএফ মেহেদীজ্জামানকে প্রধান করে গঠিত এই তদন্ত কমিটিতে চঁদপাই স্টেশন কর্মকর্তা নুরুজ্জামান ও ঢাংমারী স্টেশন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে সদস্য করা হয়েছে। 

এর আগে গত বছরের ২৮ মার্চ থেকে শুরু করে চাঁদপাই রেঞ্জে মাত্র এক মাসে চার বার নাশকতার আগুনে কয়েক কোটি টাকার বনজ সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সুন্দরবনের মাছ ধরতে মিঠা পানির বিল পরিষ্কার ও সহজ যোগাযোগের রাস্তা তৈরি করতে একশ্রেণির ক্ষমতাশালী মানুষ সুন্দরবনে পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়ে থাকে। এবারও সেই একই এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পরিকল্পিত নাশকতা বলে সন্দেহ করছে সুন্দরবন বিভাগ। 

বিডি-প্রতিদিন/২৭ মে, ২০১৭/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর