বরিশাল সদর উপজেলার টুমচর গ্রামে মৎস্যজীবী স্বরূপ আলী মৃধা হত্যা মামলার রায়ে তার স্ত্রী মমতাজ বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিক ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক কালাম হাওলাদারকে ফাঁসির দণ্ড এবং কালামের ভাগ্নে রাজিবকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বরিশালের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রকিবুল ইসলাম আসামীদের উপস্থিতিতে রবিবার বিকেলে এই রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার পর নিহত স্বরূপ আলীর ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত স্ত্রী মমতাজ বেগম আদালতেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাকে চ্যাং দোলা করে প্রিজন ভ্যানে ওঠানো হয়।রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন কাবুল সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল কাদের বলেছেন, ন্যায় বিচার বঞ্চিত হয়েছেন তারা। এর বিরুদ্ধে উচ্চাদালতে আপিল করবে আসামিরা।
আদালত সূত্র জানায়, দণ্ডিত মমতাজ বেগম ঝাঁড়-ফুকের কাজ করতো। সেই সুবাদে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক কালামের মোটরসাইকেলে বিভিন্ন স্থানে কাজে যেতেন মমতাজ। এতে দুই জনের মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক হয়। পরকীয়ার পথের কাটা সড়াতে ২০১৫ সালের ১১ মার্চ রাতে নিজ গৃহে ঘুমন্ত স্বরূপ আলীর গলায় চিকন নাইলনের রশি পেচিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যার পর তাকে ওই রাতেই সংলগ্ন চতলাখালী খালের কাঁদা মাটিতে পুতে রাখে আসামিরা। এই কাজে মমতাজ ও কালামকে সহযোগীতা করেন কালামের ভায়রা ছেলে রাজিব।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই আশরাফ আলী বাদি হয়ে পরদিন ১২ মার্চ মেট্রোপলিটনের বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ২৬ মে মমতাজ, কালাম ও রাজিবকে অভিযুক্ত করে আদালতে এই মামলার অভিযোগপত্র বন্দর থানার এসআই হেমায়েল কবির। এর আগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর ৩ আসামি স্বরূপ আলীকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে আদালতে ২০ জনের মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষগ্রহণ শেষে বিচারক উপরোক্ত রায় ঘোষণা করেন।